২৪ ঘণ্টা ধরে নলকূপের গর্তে আটকে দুই বছরের সাজিদ: ৩৫ ফুট গভীরেও মেলেনি সন্ধান, ফের খনন শুরু
৩৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করেও রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে পাওয়া যায়নি। তাই আরও গভীরে পৌঁছাতে পুনরায় এস্কেভেটর দিয়ে খনন কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। প্রায় ২৪ ঘণ্টা যাবত গভীর নলকূপের গর্তে আটকে আছে শিশুটি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী বিভাগের উপপরিচালক মো. মঞ্জিল হক জানান, ৩৫ ফুট খননের পরও শিশুটিকে শনাক্ত করা যায়নি। পরে আবার গর্তে পাইপ ঢোকানো হয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট গভীরতার পর পাইপ আর নিচে নামছে না।
তিনি বলেন, "পাইপের নিচে কী রয়েছে তা দেখার জন্য সার্চ ভিশন লাইট পাঠানো হবে। এজন্য পাইপের গোড়ায় থাকা পিলারের ব্যালান্স ঠিক রাখতে এস্কেভেটর দিয়ে আবার মাটি সরানো হচ্ছে।"
এর আগে, সকালে এস্কেভেটর দিয়ে খননকাজ শেষ হওয়ার পর খনন করা গর্ত থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সেই গভীর নলকূপের গর্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন উদ্ধার কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেছিলেন, শিশুটি যে গর্তে পড়ে গেছে, তার পাশেই এস্কেভেটর দিয়ে ৩৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করা হয়েছে। এখন রেসকিউ টিম সেই খননকৃত গর্ত থেকে নলকূপের গর্তে সুড়ঙ্গ তৈরি করছে।
"সুড়ঙ্গ করার পরও সেখানে শিশুটিকে না পেলে আর খনন করা সম্ভব হবে না। তখন ওই গর্ত থেকেই অন্য কৌশলে উদ্ধার করতে হবে। কারণ নলকূপটির গভীরতা ১৫০ থেকে ২০০ ফুট—শিশুটি ভেতরে যেকোনো জায়গায় আটকে থাকতে পারে," জানিয়েছিলেন তিনি।
এর আগে, গতকাল বুধবার দুপুর একটার দিকে বাড়ির পাশে বিলে মায়ের সঙ্গে যাওয়ার সময় পিছলে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায় দুই বছরের শিশু সাজিদ। স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে ভেন্টিলেশন দেয়। পরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আরও দুটি ইউনিট এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
প্রথমে চার্জ ভিশন ক্যামেরায় শিশুটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হলেও ৩৫ ফুট গভীরে তার সন্ধান না পাওয়ায় পাশেই রাতভর এস্কেভেটর দিয়ে খনন করা হয়। সকালে ৩৫ ফুট পর্যন্ত খনন শেষে এখন সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে উদ্ধার তৎপরতা ঘিরে ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে। শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে শিশুটি নিরাপদে ফেরার আশায় প্রার্থনা করছেন।
