রামুতে বৌদ্ধ বিহারের জমি নিয়ে দু'পক্ষের সংঘর্ষ: ভিক্ষুকে মারধর ও ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ৩
কক্সবাজারের রামুতে সদ্ধর্মোদয় বৌদ্ধ বিহার ও ভাবনা কেন্দ্রের জমির বিরোধের জের ধরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিহারের বুদ্ধমূর্তিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল বড়ুয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মৃত উপেন্দ্র বড়ুয়ার ছেলে সমদেশ বড়ুয়া লুলু, তার ছেলে রনি বড়ুয়া এবং মৃত সুবাস বড়ুয়ার ছেলে রনি বড়ুয়া।
রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ জানান, বিহারের জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ সংক্রান্ত মামলায় আদালতের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ থাকলেও, তা অমান্য করে প্রতিপক্ষ এই হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় বিহারের পরিচালক প্রজ্ঞা বিনয় ভিক্ষু বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনসহ মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত অপর দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার বাদী প্রজ্ঞা বিনয় ভিক্ষু জানান, সমদেশ বড়ুয়া লুলুর নের্তৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে রামু থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিজিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় আসামিরা ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে বিহারে প্রবেশ করে তাকে মারধর করে এবং বিবস্ত্র করার চেষ্টা চালায়। হামলাকারীরা দুটি বুদ্ধমূর্তি, নির্মাণাধীন বিহার, চেয়ার-টেবিল ও ডেকোরেশন সামগ্রী ভাঙচুর করে, যাতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দানবক্স থেকে ১৫ হাজার টাকা লুটের অভিযোগও আনা হয়েছে। আহত প্রজ্ঞা বিনয় ভিক্ষু বর্তমানে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সার্বিক বিষয়ে রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফরিদ বলেন, 'এ ঘটনায় কোনো ধরনের উস্কানি বা অপপ্রচার যেন ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।'
