বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে ‘সম্প্রীতি যাত্রা’র বিক্ষোভ
বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম 'সম্প্রীতি যাত্রা'। এ সময় আবুল সরকারের মুক্তির জন্য তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারীরা।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে এই মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে বাউল ও সুফি সাধকদের ওপর হয়রানি চালানো হচ্ছে। অবিলম্বে আবুল সরকারকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে সম্প্রীতি যাত্রার সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন বাউল-সুফি সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের হাতে 'আবুল সরকারের মুক্তি চাই', 'গান, জ্ঞান ও ভক্তির নিরাপত্তা চাই', 'মাজার দরবার রক্ষা করো', 'পৃথিবীটা একদিন বাউলের হবে'—ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
সমাবেশে বাংলাদেশ সুফি জাগরণ পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাঙালি বলেন, 'এ দেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সুফি-বাউলরা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। অথচ পরিকল্পিতভাবে শিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।'
সরকারকে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আহলে সুন্নত জামায়াতের সভাপতি মাওলানা নূরে আলম সাঈদ বলেন, 'আবুল সরকারকে মুক্তি না দিলে দেশের সব বাউল-ফকির রাস্তায় নামবে।'
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, 'একদিন পৃথিবীটা বাউলের হবে। শিল্পীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তার মানবাধিকার লঙ্ঘন, এটি মেনে নেওয়া হবে না।'
বাউল শিল্পী শাহ আলম সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'দেশজুড়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিচার না হলেও বাউলদের লক্ষ্য করে হয়রানি করা হচ্ছে।'
সরকারের দ্বিমুখী আচরণের সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, 'সরকার একদিকে লালনের অনুষ্ঠান করে, অন্যদিকে বাউল-ফকিরদের ওপর নির্যাতন চালায়। ফ্যাসিজমের এই রূপ প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে খেজুরবাগান মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় দক্ষিণ প্লাজায় এসে শেষ হয়। পুরো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে শিল্পীর মুক্তি এবং বাউলদের ওপর সব ধরনের বৈষম্য ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।
