ফরিদপুরে কুদ্দুস পীরের ওরসের দ্বিতীয় পর্ব বন্ধ করল প্রশাসন
স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ফরিদপুরে কুদ্দুস পীরের ৩১তম ওরস শরীফের দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়োজক কমিটিকে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরুর আগেই তা বন্ধের নির্দেশ দেয়। এতে ওরস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দুই শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্থানীয় এলাকাবাসী ওরস বন্ধের বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি পুলিশকে জানালে, মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল লতিফ মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দিগনগর গ্রামে কুদ্দুস পীরের বাড়িতে উপস্থিত হয়।
ঘটনাস্থলে এসআই আব্দুল লতিফ মন্ডল জানান, স্থানীয় কিছু জনগণের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা রক্ষা ও যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাহী আদেশে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, গত রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল নয়টার দিকে ফরিদপুর পৌরসভা এলাকার ফরিদপুর-মাগুরা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত দিগনগর গ্রামের কুদ্দুস পীরের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় 'তৌহিদি জনতা'র বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পীর হযরত শাহ সৈয়দ কুদ্দুস আলম সোহরাওয়ার্দী বলেন, 'তৌহিদি জনতা'র ব্যানারে ২০-২৫ জন ব্যক্তি ১০-১২টি মোটরসাইকেলে এসে পীরের খানকা শরিফ ভেঙে ফেলা এবং ওরসের দ্বিতীয় পর্ব বন্ধ করার হুমকি দেয়।'
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন, 'স্থানীয়দের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। এরপর আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জননিরাপত্তার স্বার্থে আয়োজক কমিটিকে অনুষ্ঠানটি বন্ধ রাখার অনুরোধ করে।'
এদিকে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওরসের দ্বিতীয় পর্বের বাকি তিন দিনের অনুষ্ঠান (বিচার গান ও বাউল গান) পণ্ড হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন মেলায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। আয়োজক কমিটি ও ব্যবসায়ীরা জানান, অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুই শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এখানে দোকান সাজিয়েছিলেন। হঠাৎ অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন। এ ঘটনায় পীরের পরিবার ও আয়োজক কমিটির সদস্যদের মাঝেও হতাশা বিরাজ করছে।
