ভোলায় রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে মুক্ত হলেন ডিসি অফিসে অবরুদ্ধ তিন উপদেষ্টা
ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবিতে ভোলা সফরে আসা অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানীয়দের অবরোধের মুখে পড়েন। আন্দোলনকারীরা তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে বিক্ষোভ করলে প্রায় ২০ মিনিট তারা সেখানে আটকে থাকেন। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের হস্তক্ষেপে উপদেষ্টারা গাড়িতে চড়ে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন।
অবরুদ্ধ উপদেষ্টারা হলেন: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। প্রায় ২০ মিনিট পর স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের উদ্যোগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে তারা ভোলা জেলা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ভোলা-বরিশাল সেতুসহ পাঁচ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈন উদ্দীন ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আলোচনা সভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী ডিসেম্বর সেতু নির্মাণকাজ শুরু হবে। কিন্তু শুক্রবার সভায় উপদেষ্টার বক্তব্যে বলা হয়, সেতুর নকশার কাজই এখনো শুরু হয়নি, এটি নীতিগত সিদ্ধান্তে আটকে আছে। এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা।
সভা শেষে উপদেষ্টারা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ত্যাগ করতে চাইলে আন্দোলনকারীরা তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পথরোধ করেন এবং বিক্ষোভ চালান।
ভোলাবাসী কমিটির সদস্য মেহেদি হাসান বলেন, 'সম্প্রতি পাঁচ দফা দাবিতে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুললে স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ আমাদের নিয়ে বসেছিল। তারা বলেছে আমরা যেন সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ইতোপূর্বে বলেছেন ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা বিষয়টি মেনে নিয়ে বাকি দাবিগুলো পূরণের কথা বলেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'তিনি আমাদের বলেছিলেন ডিসেম্বর নাগাদ ভোলা-বরিশাল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজ শুরু হবে। অথচ আজ তিনি বললেন নকশার কাজই শুরু হয়নি, নীতিগত সিদ্ধান্তে আটকে আছে। আজ ভোলায় তিনজন উপদেষ্টা এসেছে; ব্যবসায়ী চিন্তাভাবনা তাদের। আমরা জ্বালানি ও বাণিজ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি।'
অন্য এক আন্দোলনকারী মো. মাহাদী হাসান বলেন, 'সভায় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন ভোলা-বরিশাল সেতু সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি যেহেতু জানেন না, তাই আমরা প্রতিবাদ জানাতে উপদেষ্টাদের গাড়ির সামনে শুয়ে ছিলাম।'
এদিকে আন্দোলনকারীরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত ভোলার বাইরে গ্যাস নিতে দেওয়া হবে না।
