ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন-গণভোট করতে হবে: গণসংহতি আন্দোলনের এক দশক পূর্তি সমাবেশে জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের (জিএসএ) এক দশক পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য 'মাথাল র্যালি' করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
র্যালি শুরুর আগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দীর্ঘদিনের 'ফ্যাসিবাদী ও দমনমূলক' শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের গণঅভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। তরুণদের আত্মত্যাগ, শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণ এবং সকল শ্রেণি-পেশার ঐক্য শেখ হাসিনার 'স্বৈরাচারী' শাসনের অবসান ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, '৭১-এর চেতনা-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা—৫৪ বছরেও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন। বিদ্যমান সংবিধানের স্বৈরাচারী কাঠামো পরিবর্তন ছাড়া মানুষের মুক্তি নেই।'
সাকি বলেন, 'অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে; এটিকে আমরা স্বাগত জানাই।'
তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'এই নির্বাচন হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন, যেখানে জনগণের অনুমোদন নিয়ে নতুন গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলা হবে।'
সতর্ক করে তিনি বলেন, 'কেউ যদি নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে, তা জাতীয় স্বার্থবিরোধী। ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট সম্পন্ন করতে হবে; এটাই জনগণের দাবি।'
এ সময় তিনি আরও বলেন, 'ভারতের প্রভাব-নির্ভর রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে; বাংলাদেশ মর্যাদার সঙ্গে সমান সম্পর্ক চায়, কারো কাছে মাথা নত করবে না।'
র্যালিটি জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শুরু হয়ে বাটা সিগনাল, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখ্য, গণসংহতি আন্দোলন ২০০২ সালের ২৯ আগস্ট জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বেশ কয়েকটি গণসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে সংগঠনটি।
২০১৫ সালের ২৭-২৯ নভেম্বর তৃতীয় জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন থেকে গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ) রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
