'বেয়াদব, আমার ডায়াবেটিস': কাঠগড়ায় চকলেট খেতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের উদ্দেশে সাবেক মন্ত্রী কামরুল
জুলাই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ থানায় আল আমিন ইসলাম সোয়েব ওরফে সোহেলকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ২৩ অক্টোবর কামরুলকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মো. মাহফুজুর রহমান। আদালত তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য বুধবার ধার্য করেন।
আবেদনে বলা হয়, আসামি কামরুল ইসলাম এই মামলার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার ইন্ধনদাতা ও মদতদাতাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহসহ জড়িত অপরাপর পলাতক আসামিদের শনাক্তের জন্য তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করা একান্ত প্রয়োজন।
এদিন সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় থেকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী মধ্যে দিয়ে গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট পড়িয়ে এজলাসে ওঠানো হয় কামরুলকে। এরপর তাকে কাঠগড়ায় ঢোকানো হয়। এসময় তার আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন তাকে একটি চকলেট খেতে দেন।
কাঠগড়ার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যরা চকলেট খেতে বাধা প্রদান করেন। আসামিকে কেন চকলেট খেতে দিলেন, তার জন্য পুলিশ সদস্যরা আইনজীবীকে নিষেধ করেন।
এই সময় কামরুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের ওপর মেজাজ হারিয়ে বলেন, 'বেয়াদব কোথাকার। বেয়াদব কোথাকার। আমার ডায়াবেটিস, একটি চকলেট দিয়েছে তার জন্য বাধা প্রদান করতে হবে? বেয়াদব, আমার ডায়াবেটিস।' এসময় কামরুল ইসলাম চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। পরে পুলিশ সদস্যরা আসামির পাশে থাকা ওই আইনজীবীকে সরিয়ে দেন।
কিছুক্ষণ পরে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো বলে বিচারক আদেশ দেন। তখন আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, 'কী মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো, মামলার অভিযোগ কী? এটা আমাদের জানা দরকার।'
এসময় ওই আইনজীবী বিচারকের কাছে চকলেট ও পানি খাওয়ানোর অনুমতি চান। তখন বিচারক বলেন, 'আইন অনুযায়ী পুলিশ তাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা নেবে।' এরপর তাকে আবারও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট পড়িয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা বাংলা মোটর ফুটব্রীজের মোড়ে অবস্থান করছিলেন। এসময় আসামিরা লাঠি-সোঠা, দেশী-বিদেশী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে ছাত্র জনতার মিছিলে হঠাৎ গুলি, ইট পাটকেল ছোড়েন এবং অনবরত গুলি ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে আসামিদের ছোড়া গুলিতে ভিকটিমের বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে ৬৯ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন।
