গণভোট নিয়ে বিএনপি জটিলতা তৈরির চেষ্টা করছে: অভিযোগ জামায়াতের

গণভোট নিয়ে বিএনপি জটিলতা তৈরির চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেছেন, 'গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন দুইটা একেবারে আলাদা জিনিস। একটি হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে সরকার চালাবে। আর গণভোট হচ্ছে আমাদের কিছু সংস্কার—যেখানে সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে, নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা—এসব মৌলিক বিষয় থাকবে। গণভোটের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।'
আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।
গণভোটের সময় নিয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, 'আমরা নভেম্বর শেষে গণভোটের কথা বলেছি। এরপর আড়াই মাস সময় থাকবে জাতীয় নির্বাচনের জন্য।'
নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় ও পুলিশ প্রশাসনের প্রায় ৭০–৮০ শতাংশ কর্মকর্তা একটি দলের অনুগত দাবি করে ডা. তাহের বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, রদবদলে লটারি সিস্টেমে পোস্টিং ঠিক করবেন। এতে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি।'
কিছু কিছু উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিভ্রান্ত করছেন বলেও মন্তব্য করেন ডা. তাহের। তিনি বলেন, 'আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, আপনার ওপর আমাদের আস্থা আছে। কিছু কিছু উপদেষ্টা আপনার আশপাশে থেকে আপনাকে বিভ্রান্ত করেন। তারা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করেন। তাদের ব্যাপারে আপনার হুঁশিয়ার থাকা দরকার।'
আজ সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে যমুনায় যান জামায়াতের শীর্ষ চার নেতা। তারা হলেন- সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা'ছুম ও রফিকুল ইসলাম খান।
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর হয়েছে। এখন এটিকে আইনি ভিত্তি দেওয়া, বাস্তবায়ন করা এবং এই সনদের মধ্যে যেগুলো আগামী নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেগুলো আগেই পাস করিয়ে তার ভিত্তিতে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, 'আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে এবং এই আদেশের মাধ্যমে গণভোট হতে হবে। এটা কনস্টিটিউশন নয়, এটা এক্সট্রা-কনস্টিটিউশনাল অ্যারেঞ্জমেন্ট, যেটা কোনো সরকার এমন পরিস্থিতিতে পড়লে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আদেশের মাধ্যমে এটা হবে।'
'প্রশ্ন উঠেছে, সংস্কারের আদেশটি কে দেবেন?' আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি—যদি আইনের কোনো ব্যত্যয় না ঘটে, তাহলে আমরা চাই প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ দেবেন। রাষ্ট্রপতি এটি দেবেন না'; যোগ করেন তিনি।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর থেকে তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে দলগুলোর অবস্থানের ভিন্নতার প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন।