জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র জোবায়েদ হত্যা: মামলা নিতে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ পরিবারের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও চিহ্নিত আসামিদের নাম উল্লেখ করে পুলিশ মামলা নিতে বিলম্ব করছে ও এ নিয়ে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।
জোবায়েদ জবি'র পরিসংখ্যান বিভাগের (২০১৯-২০ সেশন) শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গতকাল (১৯ অক্টোবর) বিকেলে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি বাড়ির সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে তিনি এক ছাত্রীর বাসায় প্রাইভেট পড়াতে গিয়েছিলেন।
নিহতের পরিবার জানায়, রাত ১টা থেকে আজ (২০ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে তারা বংশাল থানায় অবস্থান করেও মামলা করতে পারেননি।
জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, 'আমরা পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চেয়েছিলাম—ছাত্রী বর্ষা, তার বাবা-মা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু মো. নাফিস। কিন্তু ওসি মামলা নিতে অস্বীকার করেছেন।'
তিনি বলেন, 'ওসি আমাদের বলেন, এতজনের নাম না দিতে, আর যদি মেয়েটির বাবা-মার নাম দেই তাহলে মামলাটা "হালকা" হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা চাই, সবাইকে অভিযুক্ত করা হোক। আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, 'তারা যাদের নাম দিতে চায়, আমরা সেই নামেই মামলা নেব। তবে আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে।'
এর আগে পুলিশ পানির পাম্প গলির একটি বাড়ির সিঁড়ি থেকে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ ধারণা করছে, ওই ছাত্রী ও তার প্রেমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দুই যুবক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।
প্রায় এক বছর ধরে জোবায়েদ আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের ১৫ নম্বর 'রওশন ভিলা'য় বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন।
ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে পুলিশ ওই ছাত্রী বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। তবে এখনো পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যার কারণ বা গ্রেপ্তার সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি। নিহতের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
হত্যার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ জবি শিক্ষার্থীরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে গতকাল বংশাল থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান।