এবার গ্রাহকের টাকা নিয়ে ‘উধাও’ অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাই ফার ইন্টারন্যাশনাল

অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ) 'ফ্লাই ফার ইন্টারন্যাশনাল' গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এয়ার টিকিটের দাম যাচাই বা বুকিংয়ের চেষ্টা করা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু গ্রাহক জানিয়েছেন, তারা ফ্লাই ফারের মাধ্যমে টিকিট ও ভ্রমণ প্যাকেজ কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, আকর্ষণীয় ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিমান টিকিট, হোটেল বুকিং এবং ভ্রমণ প্যাকেজের নামে প্রতিষ্ঠানটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ক–৯/এ, হাজি আবদুল লতিফ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলায় ফ্লাই ফারের অফিস ছিল। বুধবার ভুক্তভোগীরা সেখানে গিয়ে অফিসটি বন্ধ পান।
ট্রাভেল ব্লগার 'ট্রাভেল উইথ রাজেশ'-কে এক গ্রাহক জানান, তারা ফ্লাই ফারের কাছে ৫৪ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছেন না।
আসন্ন ছুটির মৌসুমকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা গন্তব্যে 'অবিশ্বাস্য ছাড়ে' টিকিট ও প্যাকেজের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিল। এসব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বহু গ্রাহক অগ্রিম টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টিকিট বা নথি না পাওয়ায় তারা অফিসে যোগাযোগ শুরু করেন।
তবে মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) থেকে ফ্লাই ফারের অফিস, ওয়েবসাইট এবং ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়ায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র কামরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "যেকোনো ওটিএ টিকিট বিক্রির আগে আমাদের কাছে অগ্রিম টাকা জমা দিতে হয়। তাই সরাসরি কোনো গ্রাহক ইউএস-বাংলার কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে যেসব ট্রাভেল এজেন্ট বা সাব-এজেন্ট ওই ওটিএর কাছে টাকা জমা রেখেছেন, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একইভাবে তাদের গ্রাহকরাও ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।"
দেশে ওটিএ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে ফ্লাইট এক্সপার্ট, ২৪টিকিট ডটকম এবং ফ্লাইটবুকিং ডটকমসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একই ধরনের প্রতারণা করে। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, "সম্প্রতি ফ্লাইট এক্সপার্টের ঘটনার পর আমরা আশা করেছিলাম সরকার অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।"