‘কারখানায় আগুন লাগছে, আমারে বাঁচাও’, স্ত্রী নাসিমার কাছে ফোনে স্বামীর শেষ আর্তনাদ

'নাসিমা কারখানায় আগুন লাগছে, আমারে বাঁচাও বলতে বলতেই চিৎকারের শব্দ হয়। তারপর ফোনের লাইনটা কেটে যায়। এখনও আমার স্বামীকে খুঁজে পাইনি আমি'- এভাবেই স্বামীর সঙ্গে হওয়া শেষ কথপোকথনের বর্ণনা দিচ্ছিলেন নাসিমা বেগম।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আজ (১৪ অক্টোবর) একটি কারখানা ও একটি রাসায়নিকের গোডাউনে লাগা আগুনে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেক মানুষ। নিখোঁজদের স্বজনেরা ছবি হাতে ছোটাছুটি করছেন ঘটনাস্থলে।
তেমনি একজন নাসিমা বেগম। তার স্বামীর নাম নাজমুল ইসলাম। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়। মিরপুরে আগুন লাগা পোশাক কারখানার ২য় তলার ফ্লোরে কাজ করতেন তিনি।
নাসিমা বেগম বলেন, 'বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আমার স্বামী আমারে ফোন করে কয় আগুন লাগছে। এরপর থেকে তার খোঁজ পাচ্ছি না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ইবনে সিনা সবখানে খোঁজ করেছি, কোথাও পাইনি।'
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গুরুতর আহতদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অনান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও, চারদিকে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় করেছে ঘটনাস্থলে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, 'দুটো প্রতিষ্ঠানে আগুন লেগেছে। এর মধ্যে একটি তৈরি পোশাক কারখানা, অন্যটি একটি রাসায়নিকের গুদাম। পোশাক কারখানাটি সাততলা। এর চারতলায় আগুন লেগেছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা পোশাক কারখানার এই আগুন মোটামুটি নিভিয়ে ফেলেছি। তবে রাসায়নিকের গুদামের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।'
তালহা বিন জসিম বলেন, 'রাসায়নিক কারখানায় ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল।'