গুম-খুনের মামলার বিচারে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার ঘোষণাকে স্বাগত জানাল জামায়াত

গুম ও খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চলমান বিচারপ্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই পদক্ষেপকে 'জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের পথে ইতিবাচক' হিসেবে উল্লেখ করেছে দলটি।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে জামায়াতের আমীর ড. শফিকুর রহমান বলেন, 'সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে এই বিচারপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতার স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।'
এ পর্যন্ত ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, সেনাবাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচারপ্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে এবং ন্যায়বিচারের বিষয়ে কোনো আপস করবে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা পৃথক মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিবৃতে জামায়াত আমীর বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তাকে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে গর্বিত থাকতে চান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই বাহিনীর কিছু সদস্য দেশের আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন।'
ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবে এসব সদস্য 'প্রতিপক্ষ নিধনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে অন্ধ সহযোগী' হয়ে পড়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, 'এর ফলে দেশে গুম ও খুনের এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, যা যেকোনো জাতির জন্যই গভীর দুর্ভাগ্যের বিষয়।'
তিনি আরও বলেন, 'সুনির্দিষ্ট কয়েকজনের অপরাধের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করা যায় না। অপরাধের দায় কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরই বর্তাবে।'
বিবৃতে জামায়াত আমীর আরও বলেন, 'আমরা আশা করি, কারও ওপর কোনো অবিচার চাপিয়ে দেওয়া হবে না। স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীরা শাস্তি পাবে। এতে অতীতের দায় যেমন মুছে যাবে, তেমনি ভবিষ্যতে কেউ নিজের পেশা বা অবস্থানকে ব্যবহার করে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে সাহস পাবে না। এতে জাতি দীর্ঘমেয়াদে উপকৃত হবে।'