জাতীয় পার্টির রওশনপন্থী মহাসচিব মামুনুর রশীদ ৬ দিনের রিমান্ডে

সরকার উৎখাতে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জাতীয় পার্টির (জাপা) রওশন এরশাদপন্থী মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির রমনা বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ।
শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, 'এনায়েতের জামানতকৃত মোবাইল দেখে মামুনুর রশীদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছি। এ আসামি বিমানবন্দর থেকে এনায়েতকে রিসিভ করে হোটেলে রাখেন। সেখানে থাকার খরচ তিনি বহন করেন।'
তিনি বলেন, 'এনায়েতের সঙ্গে মিলে তিনিসহ অন্যরা অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন। তার সঙ্গে আর কে কে জড়িত, এত টাকা কোথায় পেয়েছেন, এ বিষয়গুলো জানার জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করছি।'
এরপর মামুনুর রশীদের পক্ষের আইনজীবী সিরাজুল হক ফয়সাল রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
তিনি শুনানিতে বলেন, 'মামুনুর রশীদের সঙ্গে তার যোগাযোগের সিডিএমএস আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে? ভুয়া দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এনায়েতের সঙ্গে তাকে জড়ানো হয়েছে। এটা একটা মিথ্যা মামলা।'
পরে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে সিডিএমএস দেখান।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ূম হোসাইন নয়ন মামুনুর রশীদের জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, 'এনায়েতের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ফেরানোর জন্য এবং নির্বাচন বাতিল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। তারা র-এর এজেন্ট। আসামির ১০ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন। রিমান্ড না পেলে অন্তর্বতী সরকারের বিরুদ্ধে চলা ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানা যাবে না।'
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনের সামনে থেকে জাতীয় পার্টির রওশনপন্থী অংশের মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই মামলার প্রধান আসামি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে কাজী মামনুর রশিদ সরকার উৎখাতের লক্ষ্য গোপন ষড়যন্ত্র করেছেন বলে দাবি করা হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়া এলাকায় প্রাডো গাড়িতে চড়ে সন্দেহজনক চলাচল করতে দেখা যায় আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীকে। এসময় তার গাড়ি থামানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে না পারায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
এসময় তার কাছ থেকে জব্দ করা দুইটি আইফোন বিশ্লেষণ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নিজেকে বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে দাবি করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের গোপম মিশন নিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে এদেশে এসেছেন বলেও স্বীকার করেছেন।