নতুন শিল্পনীতিতে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে: শিল্প সচিব

জাতীয় এসএমই শিল্পনীতি ২০২৫ চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে যেসব সুবিধা দেওয়া সম্ভব তা সম্বলিত একটি সামগ্রিক নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এই নীতিমালায় উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে হয়েছে। আগের মতো ভাসা-ভাসা নীতিমালা করা হয়নি। নতুন নতুন অনেক বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এআইসহ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাবকন্ট্রাক্টটিংয়ের বিষয়গুলো যুক্ত করা হয়েছে।'
আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত 'ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড মার্কেটিং চ্যালেঞ্জেস ফর সিএমএসএমইস: আনলকিং এক্সপোর্টস পটেনশিয়াল' ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
শিল্প সচিব এসব কথা বলেন।
তিনি জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে নীতিমালা মন্ত্রীপরিষদ সভায় উপস্থাপন করা হবে।
ওবায়দুর রহমান বলেন, 'গার্মেন্টস খাত অনেক এগিয়েছে, কিন্তু আজও একটা ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারিনি। আমরা মূলত দর্জির কাজ করছি। কাপড় আমদানি করে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কাপড় আমদানি করে পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করছি।'
তিনি বলেন, 'ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বড় চ্যালেঞ্জ, দেশের বড় উদ্যোক্তারা এখন এখন সব পণ্য তৈরি করছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওপর হাত দিয়েছে।'
ব্র্যান্ডিংয়ে বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন তিনি। সচিব বলেন, 'দু-একটা দেশ ছাড়া তারা কোনো কাজ করে না। বাংলাদেশি পন্য বিদেশে ব্র্যান্ডিং করতে তাদের ভূমিকা আরও বাড়ানো দরকার।'
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেছেন, সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশের কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তারা নানা জটিলতার কারণে রপ্তানিতে সফল হতে পারছেন না।'
তিনি বলেন, 'সিএমএসএমইস খাত অর্থায়নে সীমিত সুযোগ, বাজারে প্রবেশের জটিলতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, জটিল নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকার মতো সমস্যায় ভুগছে।'
ডিসিসিআই সভাপতি জানান, রপ্তানিতে ব্যর্থতার পেছনে রয়েছে অভ্যন্তরীণ, বহিরাগত ও সম্পর্কগত নানা কারণ। তিনি বলেন, ' অভ্যন্তরীণভাবে ব্র্যান্ডিং জ্ঞানের অভাব, দুর্বল বাজার গবেষণা, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ঘাটতি এবং পণ্যের সঠিক অবস্থান তৈরি না হওয়া বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। বহিরাগতভাবে জটিল কাস্টমস প্রক্রিয়া, অনলাইন পেমেন্টে প্রতিবন্ধকতা, লজিস্টিক্স সংকট এবং অস্থির বাণিজ্যনীতি রপ্তানিকে আরও কঠিন করে তুলছে।'
তাসকিন আহমেদ বলেন, 'সম্পর্কের ক্ষেত্রেও দুর্বলতা রয়েছে। যেমন—সঠিক আমদানিকারক বেছে নিতে না পারা, আস্থার সম্পর্ক গড়ে না ওঠা এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নিয়মিত ও কার্যকর যোগাযোগের অভাব রপ্তানি ব্যর্থতায় ভূমিকা রাখছে।'
তিনি আরও উল্লেখ করেন, 'কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা যেমন আর্থিক সহায়তার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা, পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজের অভাব, দুর্বল বাজার সংযোগ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘাটতি সিএমএসএমইস খাতকে টেকসইভাবে এগোতে বাধা দিচ্ছে।'