পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকার কি ভজকট পাকিয়ে ফেলেছে?

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় গত পনেরো বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া শত শত কোটি ডলারের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, 'আমরা এই সম্পদ ফিরিয়ে আনতে অক্লান্তভাবে কাজ করছি। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া ও অন্যান্য বাধায় আমাদের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।'
কিন্তু এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে কাজ করছে, তা সম্পদ উদ্ধারের প্রক্রিয়াকে আদতে ক্ষতিগ্রস্তই করেছে। এ সরকার নিজেই নিজের কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
কয়েক বছর আগের কথা। আমি তখন ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সম্পদ জব্দের জন্য মার্কিন বিচার বিভাগকে রাজি করানোর প্রচেষ্টায় যুক্ত ছিলাম। সেটি ছিল কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের এক বিলাসবহুল এস্টেট। আফ্রিকার খনি ও পেট্রোলিয়াম শিল্পে দুর্নীতিবিরোধী আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সুবাদে কিছু সংবেদনশীল তথ্য এসেছিল আমার হাতে। শেল কোম্পানি ও ট্রাস্টের আড়ালে ওই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক ছিলেন আফ্রিকার একটি দেশের একজন মন্ত্রী, কাগজপত্রে যার বার্ষিক আয় ছিল কয়েক হাজার ডলার, লাখ ডলারও নয়।
তথ্যগুলো আমাকে দিয়েছিল একটি অনুসন্ধানী এনজিও। খবরটি প্রকাশ করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিল। তবে অনেক বোঝানোর পর আমরা সবাই বিষয়টি নিয়ে অধিকতর আলোচনা করার আগপর্যন্ত তারা আপাতত সংবাদটি প্রকাশ না করতে রাজি হয়। আমি অন্তত তা-ই ভেবেছিলাম।
সাধারণত মনে করা হয়, কোনো কর্মকর্তার দুর্নীতির প্রমাণ দ্রুত প্রকাশ্যে আনলেই জনগণের সবচেয়ে বেশি মঙ্গল হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটাই সত্যি। কিন্তু কিছু পরিস্থিতিতে প্রচার ঠিক উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে। এর ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে জনস্বার্থ রক্ষার সব সম্ভাবনা।
ওই এনজিওর প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি যেদিন প্রকাশিত হয়, সেদিন আমি লন্ডনে নিজের অফিসে ওয়াশিংটন ডিসির একটি প্রতিষ্ঠানের একজন সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। আমরা যখন পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধার এবং সেই মন্ত্রী ও আমেরিকান কর্পোরেশনগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনার কৌশল নিয়ে গভীর আলোচনায় মগ্ন ছিলাম, ঠিক তখনই ভদ্রলোক হঠাৎ আলোচনা থামিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, এইমাত্র তার ইনবক্সে আসা ই-মেইলটি আমি দেখেছি কি না।
আমার ব্রাউজারের উইন্ডো রিফ্রেশ করতেই দেখতে পেলাম সেটি। ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনজিওটি তাদের অনুসন্ধানের ফলাফল সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই, শুভাকাঙ্ক্ষীরা একে স্বচ্ছতার জয়গান এবং ন্যায়বিচারের পথে এক ধাপ অগ্রগতি হিসেবেই দেখেছে।
কিন্তু ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আমার সেই সহকর্মী, সিনিয়র আইনজীবী, দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আমি তখনও আশা ছাড়িনি। কিন্তু বহু বছরের অভিজ্ঞতা ওই আইনজীবীকে আমার মতো তরুণ আইনজীবীর ন্যায় অমূলক আশায় বুক বাঁধতে দিল না।
'ব্যস, সব শেষ,' বললেন সেই সিনিয়র আইনজীবী। 'সম্পত্তিটা হাতছাড়া হয়ে গেল। শেল কোম্পানি ও ট্রাস্টের আড়ালে মালিকানার কাঠামো বদলে ফেলে বহু বছরের জন্য সম্পত্তিটা লুকিয়ে ফেলতে আমার একদিনও সময় লাগবে না।' তারপর ঠাট্টা করে যোগ করলেন, আমার মতো একজন জুনিয়র আইনজীবীর এই কাজ করতে এক সপ্তাহ লেগে যেত।
উল্লেখ্য, শুধু এনজিওটির প্রেস বিজ্ঞপ্তির তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন বিচার বিভাগের পক্ষে ওই সম্পত্তি ফ্রিজ করার আদেশ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এমনকি এনজিওটি মার্কিন বিচার বিভাগকে আগে থেকে কোনো তথ্যও দেয়নি।
ওই এনজিওর প্রেস বিজ্ঞপ্তির ফলাফল ছিল অনেকটা আগাম সতর্ক করে দেওয়ার মতো। এর মাধ্যমে মন্ত্রীকে সতর্ক করে দেওয়া হলো, তার সম্পত্তি জব্দ করার চেষ্টা চালানো হতে পারে। স্বভাবতই মন্ত্রীর আইনজীবীরা দ্রুত মালিকানার কাঠামো পরিবর্তন করে আবারও সম্পত্তিটি লুকিয়ে ফেলবে। এনজিওর এই কাজের ফলে মার্কিন বিচার বিভাগের সম্পত্তিটি জব্দ করার সব সম্ভাবনা দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়ল। এই পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করা সত্ত্বেও ওই এনজিও কেন এমন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল, সে বিষয়ে আমি পরে আসছি।
প্রভাবশালী ও ধনী ব্যক্তিরা যেখানে খুব সহজেই সেরা আইনজীবীদের সাহায্য পান এবং দ্রুত মালিকানা লুকানোর সামর্থ্য রাখেন, সেখানে পাচার হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য গোপনীয়তা রক্ষা করা অপরিহার্য। ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অগ্রগতি হওয়ার আগেই আরও এক দশক পেরিয়ে যায়, এরপরও ক্যালিফোর্নিয়ার ওই সম্পত্তিটি উদ্ধারের দাবি করা সম্ভব হয়নি।
গত বারো মাস ধরে আমি যখন হতাশ হয়ে দেখছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে পদে পদে সাবেক 'ক্লেপ্টোক্র্যাটদের' (রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারী নেতা) বিরুদ্ধে তাদের অভিযানের ঢাকঢোল পেটাচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই এই পুরনো ঘটনাগুলো মনে পড়ছিল। হাসিনা সরকারের সদস্যরা যে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা চুরি করেছে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমি দেখে বিস্মিত হয়েছি যে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পদ উদ্ধারের কাজটি করছে সূক্ষ্মতা ও বিচক্ষণতার লেশমাত্র না রেখে, বরং ঢাকঢোল পিটিয়ে।
শুরু থেকেই বিগত সরকারের সম্পদ লুটপাটকারীদের ধরতে উচ্চকণ্ঠ ছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছে এবং সময়ের সাথে সাথে চুরি করা অর্থে কেনা সম্পত্তি ও অর্থের দিকে ইঙ্গিত করেছে।
ইংল্যান্ড থেকে সম্পদ উদ্ধার করতে হলে বাংলাদেশ সরকারের স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার আইনি সংস্থাগুলোর সাহায্যের প্রয়োজন হবে। বলাবাহুল্য, এ ধরনের সংস্থাগুলো কাজ পাওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদনও করছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এভাবে আগাম তথ্য ফাঁস করে দেওয়া এবং প্রকাশ্যে সম্পদ উদ্ধারের ঘোষণা দেওয়ায় তারা হতাশ হয়েছে। এ সরকার সম্পদ খুঁজে বের করার কাজটিকে সরকারি সংস্থা ও আইনি সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য আরও কঠিন করে তুলেছে; এর ফলাফলকে আরও অনিশ্চিত করে দিয়েছে।
এর একটি উদাহরণ হলো যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য একটি দেশে পাচার হওয়া অর্থ সম্পর্কে এশিয়ায় থাকা একজন এফবিআই এজেন্টের মন্তব্য, যা আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বরাতে শুনেছি। ওই এজেন্ট বলেছিলেন: সম্পদগুলো উধাও হয়ে গেছে, 'চোখের পলক ফেলার আগেই'।
মনে রাখতে হবে, এসব সম্পদ উদ্ধারের চেষ্টায় ব্রিটিশ সরকারের নিজের বড় কোনো লাভ নেই বললেই চলে। ফলে এক্ষেত্রে তাদের উদ্যোগ নেওয়ার প্রেরণাও দুর্বল। কারণ এসব সম্পদ ব্রিটেন থেকে কিংবা কোনো ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান থেকে চুরি হয়নি।
এর পাশাপাশি ব্রিটেন দীর্ঘদিন ধরেই অর্থ পাচারের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। দুর্নীতিবিরোধী মহলে অনেকে একে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানি লন্ডারিং কেন্দ্র মনে করেন। কেম্যান আইল্যান্ডস, গার্নসি ও জার্সি মূলত লন্ডনের অর্থ রাখার প্রধান জায়গা। একে সিস্টেমের ব্যর্থতা ভাবা ভুল হবে; বরং অনেকে একে বৈশিষ্ট্য (ফিচার) মনে করেন, কোনো অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি (বাগ) নয়।
আর কারও কাছে যদি এখনও স্পষ্ট না হয় যে বাংলাদেশকে সম্পদ উদ্ধারে সহায়তা করা ব্রিটেনের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার বিব্রতকর যুক্তরাজ্য সফরের কথা স্মরণ করুন। একবার নয়, দুবার যুক্তরাজ্য সফর করেও কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পাননি তিনি।
ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে স্টারমারের অস্বীকৃতি আসলে অন্তর্বর্তী সরকারের অক্ষমতার প্রতিফলন নয়, বরং তা আজকের পশ্চিমা দেশগুলোতে তৈরি হওয়া নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আমরা যে পরিবর্তিত বিশ্বে বসবাস করছি, তারই প্রকৃত চিত্র। যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক খবরের দিকে কয়েক মিনিট নজর দিলেই বোঝা যাবে, গত এক বছরে দেশটির রাজনীতি কেঁপে উঠেছে নানা ঘটনায়—নব্য নাৎসি দাঙ্গা থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পতন, ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের উত্থান থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট পর্যন্ত। ফলে ব্রিটিশ রাজনৈতিক শ্রেণির কাছে বাংলাদেশের দুর্নীতি ও লুটপাটের বিষয়গুলো অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে একেবারেই গৌণ।
কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার কেন সম্পদ উদ্ধারের উদ্যোগগুলো এভাবে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়ার মতো সুস্পষ্ট বোকামি করল, যা সম্পদ উদ্ধারকে আরও সুদূরপরাহত করে তুলছে? কেন তারা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কর্ণপাত করল না?
ধরা যাক, অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতেই ন্যূনতম আইনি পরামর্শ নিয়েছিল। তাহলে তারা নিশ্চয়ই জেনে যেত, সব বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা দ্রুত কাজ করলেও অন্তত পাঁচ বছর বা তার বেশি সময়ের আগে বাংলাদেশের কোষাগারে এক টাকাও ফেরত আসবে না। সম্পদ উদ্ধারে সময় লাগে। অন্তর্বর্তী সরকার সম্ভবত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল, এই দীর্ঘ সময় তাদের জন্য সহায়ক নয়—কারণ পাঁচ বছর পর এ সরকার ক্ষমতায় থাকবে না; তাই উদ্ধার হওয়া সম্পদের কোনো কৃতিত্বও তারা আর নিতে পারবে না। সর্বোপরি, গত বারো মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকলাপের ধরন দেখে মনে হয়েছে, কোনো কাজ সম্পন্ন করার চেয়ে কমিশন ও কমিটি গঠন, গোলটেবিল বৈঠকে যোগদান এবং এর মাধ্যমে কিছুটা কৃতিত্ব নেওয়ার দিকেই তাদের মনোযোগ বেশি।
অনেক বছর আগের ক্যালিফোর্নিয়ায় আমার নিজের মামলার অভিজ্ঞতায় মনে আছে, ওই এনজিও তখন প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়েছিল। তার কারণও বোধগম্য বটে—তারা জানত, এটা কেবল সময়ের ব্যাপার, শিগগিরই খবর ফাঁস হয়ে কোনো পত্রিকা বা প্রতিষ্ঠান ক্যালিফোর্নিয়ার সম্পত্তির খবর প্রকাশ করবে, এমনকি কৃতিত্বও নিতে পারে। অনুসন্ধানী এনজিওগুলোর অস্তিত্বের মূল কারণই হলো তথ্য খুঁজে বের করা ও প্রকাশ করা। তাদের অর্থায়ন মডেলও এর ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো পত্রিকা বা এনজিও যদি আগে খবর প্রকাশ করে ফেলে, তাহলে তা সরাসরি তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
একইভাবে, সম্পদ উদ্ধারে কার্যকর প্রচেষ্টা চালাতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে গোপনীয়তা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নেপথ্যে থেকেই কাজ করতে হবে। কিন্তু এ ধরনের গোপনীয়তা বজায় রাখলে প্রকাশ্যে কৃতিত্ব নেওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
আদালতের জারি করা ফ্রিজিং অর্ডার যেকোনো সম্পদ—ভৌত বা আর্থিক—বিক্রি, হস্তান্তর বা কাঠামো পরিবর্তন ঠেকায়। এ ধরনের অর্ডারের একটি দিক গোপনীয়তার গুরুত্ব বোঝায়।
ইংল্যান্ডের আদালত অনেক সময় সম্পদের মালিকপক্ষকে না জানিয়েও ফ্রিজিং অর্ডার জারি করতে পারে। কেন এমন আদেশ প্রয়োজন বা উপকারী হয়? দক্ষ আইনজীবীদের তৎপরতার কারণে অনেক সময় এ ধরনের আদেশ গোপনে জারি করা হয়—অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে ব্যাংক ও নিবন্ধনকারী সংস্থাগুলোকে জানানো হয়। কার্যত এটি হয় অস্থায়ী 'গোপন' ফ্রিজিং অর্ডার। কারণ কিছু আইনজীবী মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সম্পদ সরিয়ে নিতে বা মালিকানা বদলে দিতে সক্ষম।
অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ উদ্ধারের অদক্ষ ও আনাড়ি প্রচেষ্টার সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ বোধহয় অযোগ্যতা এবং করতালি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। সম্পদ উদ্ধার নিয়ে শোরগোল করলে সাধারণ মানুষের কাছে হাততালি কুড়ানো যায় বটে, কিন্তু এটি বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং প্রচলিত জ্ঞানেরও বিরোধী। অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করেছে, তাতে এটা বিশ্বাস করা আরও সহজ যে তারা সঠিক আইনি পরামর্শকেও খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি (যদিও এ বিষয়ে আলাদাভাবে বিশ্লেষণ প্রয়োজন)।
যা-ই হোক, একটি বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কার—বিদেশে চুরি ও পাচার হওয়া সম্পদের বড় অংশই এখন সরকারি সংস্থার নাগালের বাইরে। আর অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড লুট করা সেই সম্পদের প্রকৃত মালিকানা খুঁজে বের করা আরও কঠিন করে তুলেছে।
জিয়া হায়দার রহমান একজন সাবেক দুর্নীতিবিরোধী আইনজীবী ও ব্যাংকার। তিনি 'ইন দ্য লাইট অভ হোয়াট উই নো' উপন্যাসের লেখক। তার এই উপন্যাসটি ব্রিটেনের প্রাচীনতম সাহিত্য পুরস্কার জেমস টেইট ব্ল্যাক মেমোরিয়াল প্রাইজ লাভ করে। জিয়া অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, লন্ডন, মিউনিখ ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত, অর্থনীতি ও আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। ডার্টমাউথ কলেজের একজন মন্টগোমারি ফেলো ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির র্যাডক্লিফ ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি-তে ফেলো হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি।