বুয়েটের সনি হত্যা মামলার দণ্ডিত টগর অস্ত্র মামলায় আবার কারাগারে
বুয়েট শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় দণ্ডিত মুশফিক উদ্দিন টগর আবারও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) অস্ত্র আইনের মামলায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিয়ার রহমান বুলবুল টগরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই আশরাফুল আলম।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার লালবাগের আজিমপুর এলাকা থেকে টগরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি রিভলবার ও ১৫৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরদিন আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ডে দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ জানতে পারে আজিমপুরের চায়না বিল্ডিং গলির একটি বাসায় টগর মাদক কেনাবেচা করছে। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। পরে টগর স্বীকার করেন যে তার কাছে অস্ত্র ও গুলি আছে। তার দেখানো মতে রুম থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, কাঠের পিস্তলের গ্রিপ, একটি মিসফায়ার গুলি, ১৫৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, শর্টগানের খালি কার্তুজ, দুটি মুখোশ ও দুটি মোবাইল ফোন। এসবের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। এ ঘটনায় র্যাব-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার ডিএডি মো. খালেকুজ্জামান ১৯ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কেমিকৌশল বিভাগের ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। দরপত্রকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে টগর ও মোকাম্মেল হায়াত খানের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ মুখোমুখি হয়। সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে প্রাণ হারান সনি।
ঘটনার পর দেশজুড়ে ছাত্রদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৩ সালের ২৯ জুন আদালত রায়ে টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ও নুরুল ইসলাম সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আরও পাঁচজনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে ২০০৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তর করে এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে দুজনকে খালাস দেয়।
সনি হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে চারজন বর্তমানে কারাগারে আছেন। টগর প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২০০২ সালের ২৪ জুন। দীর্ঘ সাজাভোগ শেষে তিনি ২০২০ সালের ২০ আগস্ট কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। তবে নতুন অস্ত্র মামলায় আবারও কারাগারে ফিরলেন তিনি।
