জাকসু নির্বাচন: ভোট গণনার বিলম্বে প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

টানা দুইদিন ধরে চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। গতকাল (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হলেও এখনও শেষ হয়নি গণনা।
তবে দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভোট গণনার কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে। আবার কখন নাগাদ এই কার্যক্রম শেষ হতে পারে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কোনো সময়ের কথা বলছেন না নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভোট গণনার গোটা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অধিক সংখ্যক লোকবল যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম।
গণনার এই দীর্ঘসূত্রতায় ভোট গণনার স্বচ্ছতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলেও মনে করছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের জিএস পদপ্রার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম। এক্ষেত্রে সব প্যানেল মিলে একত্রিত হয়ে রাজি হলে ভোট গণনার ক্ষেত্রে ওএমআর পদ্ধতিতে যাওয়া যেতে পারে বলেও মত দেন তিনি।
তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, 'ম্যানুয়ালি ভোট গণনা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং কষ্টকর। যারা ভোট গণনা করছেন তারাও দক্ষ নন, সেক্ষেত্রে দেরি হওয়াটা লজিক্যাল [যুক্তিসংগত]। কিন্তু যখন কোনো ভোট গণনা হয় তখন কোনো হলের প্রার্থীরা কত ভোট পাচ্ছেন তা জানার সুযোগ করে দেয়া হয়নি। যদি প্রশাসন এই সুযোগ করে দিত, তাহলে নির্বাচনে আরও স্বচ্ছতা থাকতো।'
'যেহেতু ভোট গণনায় অনেক দেরি হচ্ছে তাতে সন্দেহ তৈরি করবেই। আর যদি সব প্যানেল মিলে একত্রিত হয়ে রাজি হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন ভোট গণনায় ওএমআর পদ্ধতিতে যেতে পারে', যোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে শিবির সমর্থিত জিএস প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, '২০২৫ সালের মতো সময়ে এসে এমন পুরোনো আমলের ম্যানুয়াল পদ্ধতি না রাখাটাই সমীচীন ছিল। খুব ভালো হতো যদি ওএমআর পদ্ধতিতে যেভাবে ভোট গণনা কার্যক্রম চলার কথা ছিল সেটি করা হতো। কিন্তু আমরা দেখেছি ছাত্রদল ওএমআর মেশিনের ব্যাপারে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অসত্য অভিযোগ এনে ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট গণনার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে, যা খুবই দুঃখজনক। প্রশাসনও আসলে ছাত্রদলের দাবিতে একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে যে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা হবে।'
তিনি বলেন, 'আমরা দেখছি গতকাল রাত থেকেই আমাদের শিক্ষকরা, রিটার্নিং অফিসার যারা রয়েছেন, তারা কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু লোকবল সংকট রয়েছে। এভাবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে একটি একটি করে ভোট গণনা করা অত্যন্ত দুরূহ একটি কাজ।'
তবে ভোট কার্যক্রম স্বচ্ছভাবেই হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমরা খোঁজখবর রাখছি, উনারা স্বচ্ছভাবেই ভোট গণনা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা করছি শেষ পর্যন্ত এই স্বচ্ছতা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাবো অধিক সংখ্যক লোকবল যুক্ত করে এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে।'
এদিকে দুপুর পেরিয়ে গেলেও কখন নাগাদ এই ভোট গণনা কার্যক্রম শেষ হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো সময় উল্লেখ করতে পারেননি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা।
দুপুর একটার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এখন ২১টি হলের মধ্যে পর্যন্ত ১৮টি হলের গণনা কার্যক্রম শেষ হয়েছে, ৩টি হলের গণনা কার্যক্রম চলমান। নামাজের বিরতির পর আড়াইটা থেকে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু হবে।'