রাকসু নির্বাচন: মনোনয়নপত্র নিলেন ৫১ বছর বয়সী শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ৫১ বছর বয়সী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মোর্শেদ খান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশন সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লিড়তে চান তিনি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন শাহরিয়ার মোর্শেদ। তিনি জানান, বর্তমানে তার বয়স ৫১ বছর হলেও তিনি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, তার বড় মেয়ের জামাইও একই শিক্ষাবর্ষে পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ছাত্র।
চার মেয়ের বাবা শাহরিয়ার মোর্শেদ বলেন, 'ব্যক্তিজীবনে আমি চার মেয়ের বাবা হলেও শুধুমাত্র সংগ্রামের কারণে এতদূর এসে পৌঁছেছি।' তিনি সবার দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান।
তিনি বলেন, 'এই বয়সে পড়তে এসে যেহেতু আমার বাধা লাগেনি, অতএব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও আমার বাধা আসেনি। মানুষের মানসিক জোর হচ্ছে সবচেয়ে বড় জোর। মানসিক জোর থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।'
নির্বাচিত হলে কী করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছি। আমি এই পদে নির্বাচিত হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব এবং তাদের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করব।
তিনি আশা করেন, একজন সংগ্রামী মানুষ হিসেবে সবাই তাকে ভোট দিয়ে পাশে দাঁড়াবে এবং জয়ী করবে।
শাহরিয়ার মোর্শেদ খানের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার রাজাপুর গ্রামে।
তিনি জানান, শিক্ষাজীবনের শুরুতে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু পারিবারিক কারণে পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। দীর্ঘ বিরতির পর তিনি আবার পড়ালেখা শুরু করেন। ২০১৭ সালে এসএসসি এবং ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ বকুল বলেন, 'বেশি বয়সের কারণে আমরা শিক্ষকরা তাকে এমনিতেই একটু বেশি মনোযোগ ও গুরুত্ব দিই। তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল ও উন্নতি কামনা করছি।'
রাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের অর্ডিন্যান্সে আছে, নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থীকে কারেন্ট (বর্তমান) স্টুডেন্ট হতে হবে। তিনি যেহেতু কারেন্ট স্টুডেন্ট, ফলে তার প্রার্থী হতে কোনো বাধা নেই। তার প্রার্থী হওয়াটাকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।'