রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালালকে পুলিশে সোপর্দ, হল থেকে বহিষ্কার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বতন্ত্র ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী জালাল আহমদ জালালের বিরুদ্ধে তার রুমমেটকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জালালকে হল থেকে বহিষ্কারের পর শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটলে পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
আহত শিক্ষার্থী মো. রবিউল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। ঘটনার পরপরই হলের অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত রবিউল হক জানান, 'জালাল রাত সাড়ে বারোটার দিকে রুমে এসে লাইট অন করে এবং শব্দ করতে থাকে। ফলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তখন আমি বলি, সকালে আমাকে লাইব্রেরিতে যেতে হবে, অযথা শব্দ করলে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে। এতে সে রেগে গিয়ে আমাকে অবৈধ, বহিরাগত বলে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করে জখম করে। পরে কোনোক্রমে আমি নিজেকে আত্মরক্ষা করি।'
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, 'রবিউলকে ছুরিকাঘাত নয়; বরং টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।'
অন্যদিকে, অভিযুক্ত জালাল আহমদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের শরীরে ক্ষতচিহ্নের ছবি পোস্ট করে পালটা অভিযোগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে অবৈধ ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার দাবিতে উকিল নোটিশ পাঠানোর প্রাক্কালে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে, আজ রাত সাড়ে বারোটার দিকে আমাকে মেরেছে আমার রুমমেট রবিউল ইসলাম। সে গত কয়েক মাস ধরে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছে।'
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলামসহ হল প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে জালালকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, 'জালালকে হল থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রত্ব বাতিলেরও অনুরোধ জানানো হবে। মামলাও করা হবে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে।'
এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাতেই অভিযুক্ত জালাল আহমদকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং জালাল বর্তমানে থানা হেফাজতে আছেন।
এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালাল আহমদকে হল থেকে বের করে পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় একদল শিক্ষার্থী 'মব' সৃষ্টি করে জালালকে মারধর করেন । এসময় প্রক্টরিয়াল টিমের দুজন সদস্যও আহত হন ।
এদিকে হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত জালালের বিরুদ্ধে এর আগেও রবিউলের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে তারা দাবি করেন।