রাজশাহীতে পানের বরজ থেকে ঋণগ্রস্ত কৃষকের মরদেহ উদ্ধার

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার খাড়ইল গ্রামে সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পানের বরজ থেকে এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত আকবর শাহ (৫০) খাড়ইল গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৃত আকবর ও তার স্ত্রী সেলিনা বিবি ১১টি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও স্থানীয় সুদ কারবারিদের কাছ থেকে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন। এর মধ্যে শুধু এনজিও থেকেই তারা ৪ লাখ টাকার বেশি ঋণ নেন। কিন্তু এবার পান চাষে লোকসান হওয়ায় আকবর শাহ কিস্তি শোধ করতে পারছিলেন না।
নিহতের ছেলে সুজন শাহ বলেন, 'আমাদের এক বিঘা জমির পান বরজের আয়েই সংসার চলত। এবার পান বিক্রি করে কোনো লাভ হয়নি। প্রতি সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হতো। কিন্তু এনজিওর লোকজন প্রতিদিন এসে চাপ দিতেন। ঋণের চাপে পড়ে বাবা আত্মহত্যা করেছেন।'
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, 'আকবর শাহ কৃষিজীবী মানুষ ছিলেন। এ বছর পান বরজে লোকসান হওয়ায় তিনি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন। তা নিয়ে হতাশা ছিল। এই হতাশা থেকে রোববার দিবাগত রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।'
তিনি বলেন, 'আকবরের ৬-৭টি এনজিওতে ঋণ চলছিল বলে শুনেছি। সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা কিস্তি লাগত।'
ওসি আরও বলেন, 'তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।'
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঋণের চাপে ও খাবারের অভাবে মিনারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তার স্ত্রী, ছেলে ও শিশুকন্যাকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন বলে চিরকুটে লিখে যান।