সিলেটে এক এলাকা থেকেই আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার

সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স্টোন ক্রাশার মিল। এসব ক্রাশার মিলে আড়ালে মজুদ করা হচ্ছিল জাফলং ও সাদা পাথর এলাকা থেকে লুট হওয়া পাথর।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে টাস্কফোর্সের অভিযানে ধোপাগুলের বিভিন্ন স্টোন ক্রাশার মিল ও বাসাবাড়ি থেকে আড়াই লাখ ঘনফুট সাদা পাথর উদ্ধার করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াতের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধোপাগুলের মহালধিক গ্রামে বসতবাড়ির আশপাশে এবং ক্রাশার মিলগুলোতে বালুমাটি দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় পাথর মজুদ ছিল। উদ্ধার হওয়া এসব পাথর সাদা পাথর এলাকায় পুনরায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে পাথর লুটপাট বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
অভিযানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এদিনই গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি এলাকা থেকেও ২ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী।
এর আগে, গত সপ্তাহে সাদা পাথর এলাকায় প্রকাশ্যে ব্যাপক পাথর লুটের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর গত বুধবার (১৩ আগস্ট) থেকে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেয়। গত দুই দিনে এক লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) খনিজ সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় প্রায় দুই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলার পরদিন রাতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রশাসন ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে লুট হওয়া মোট পাথরের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশ করেনি প্রশাসন।
স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই সাদাপাথর এলাকায় শুরু হয় পাথর লুটপাট। অভিযোগ রয়েছে, এতে স্থানীয়ভাবে সব রাজনৈতিক দলের নেতারা জড়িত। এর মধ্যে বিএনপির ১৬ জন নেতার নাম পাওয়া গেছে এবং আওয়ামী লীগেরও একাধিক নেতা এতে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইতোমধ্যে পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করা হয়েছে।
এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে লুট হওয়া সব পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে লুটে জড়িতদের তালিকা আদালতে দাখিল করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর পক্ষে রিট করেন সরওয়ার আহাদ এবং শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ।