রাজশাহীতে কোচিং সেন্টারে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অস্ত্র-বিস্ফোরক উদ্ধার; পরিচালকসহ আটক ৩

রাজশাহীর দরিখরবোনা কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনী জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ৪০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি দল, দীর্ঘ এক মাসের গোয়েন্দা নজরদারির পর 'ডক্টর ইংলিশ' নামের ওই কোচিং সেন্টারে বিশেষ অভিযান চালায়।
অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও স্থানীয় ইংরেজি শিক্ষক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য, মো. রবিন এবং মো. ফয়সালকে আটক করা হয়।
অভিযানে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি, সামরিক মানের দূরবীন ও স্নাইপার স্কোপ, ৬টি দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি ৭টি ধারালো ডেগার, ৫টি ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক জিপিএস, একটি টিজার গান, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কার্টিজ, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিমকার্ড, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, ৬টি কম্পিউটার, নগদ ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা, দেশি-বিদেশি মদ এবং ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
বাড়ির ভেতরে পাওয়া বিস্ফোরক সেনাবাহিনী ও পুলিশ মিলে নিয়ন্ত্রিতভাবে নিষ্ক্রিয় করে। পরে সন্দেহভাজন অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে পাশের একটি পুকুরে তল্লাশি চালাতে নামানো হয়।

দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, 'অস্ত্র ও বিস্ফোরকের একটি বড় মজুদের তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।'
পৌনে চারটার দিকে মুনতাসিরুল অনিন্দ্যসহ তিনজনকে কোচিং সেন্টার থেকে পুলিশের গাড়িতে করে বোয়ালিয়া মডেল থানায় নেওয়া হয়।
এ সময় অনিন্দ্য বলেন, 'আমি নিরপরাধ। ফরেনসিকে প্রমান হবে, জামিনে বের হয়ে আসবো'
তার চাচাত বোন নীলা জামান বলেন, 'অনিন্দ্য ভালো ছেলে। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ মেনে নিতে পারছি না।'
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আটক অনিন্দ্য রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। আর অনিন্দ্যের বাবা শফিউল আলম রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
অনিন্দ্যকে এর আগেও ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে র্যাব আটক করেছিল।
অভিযানের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর ৪০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এখনও গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেয়নি।