বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের মামলায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আটক

যশোরের নওয়াপাড়ায় ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের মামলায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত আসাদুজ্জামান জনিকে (৪০) খুলনা থেকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খুলনা শহরের রোজ গার্ডেন হোটেল থেকে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটকের পর জনিকে নিয়ে নওয়াপাড়াতে তার ইকোপার্কসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম।
জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দলীয় বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে জনির কণা ইকো পার্কে বালুতে পুঁতে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন।
ঘটনার ১১ মাস পর, চলতি বছরের ২ আগস্ট আসাদুজ্জামান জনিসহ ছয়জনের নামে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী। একই অভিযোগ স্থানীয় সেনাক্যাম্পেও করা হয়।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ডিশ ব্যবসায়ী মিঠু ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা জনির বাবা কামরুজ্জামানকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পলাতক রয়েছেন আরও তিন আসামি। তারা হলেন- পৌর বিএনপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট হোসেন, নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরী ও গরু হাটখোলার সৈকত হোসেন হিরা।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলীম জানান, তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
ভুক্তোভুগীর স্ত্রী আসমা খাতুন জানান, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কৌশলে সৈকত হোসেন হিরার মাধ্যমে তার স্বামী টিপুকে নিজের অফিসে ডেকে নেন আসাদুজ্জামান জনি। সেখানে তাকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন। পরে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এসবিএসি) থেকে জনির নিজ প্রতিষ্ঠানের হিসাবে দুই কোটি টাকা তিনি আরটিজিএস করে পাঠান। টাকা পেয়ে টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে ব্যবসায়ী টিপু মোটরসাইকেলযোগে বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে সৈকত হোসেন হিরা তার গতিরোধ করেন। এরপর তাকে জনি, সম্রাট হোসেন ও মফিজ উদ্দিন আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করেন। টিপুকে বুক পর্যন্ত খোঁড়া বালু চাপা দিয়ে আরও ২ কোটি টাকা দাবি করা হয়। বাধ্য হয়ে তিনি ম্যানেজারের মাধ্যমে টাকা দেন।
এছাড়া জনির নামে ও দিলিপ সাহার নামে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানো হয়। কাউকে কিছু না জানানো ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অবশেষে ছেড়ে দেওয়া হয় টিপুকে।