আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর

গত বছরের ১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরীতে আন্দোলন দমাতে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি করতে বেতার বার্তায় (পুলিশের ওয়্যারলেসে দেওয়া) নির্দেশনা দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন কমিশনার হাবিবুর রহমান।
আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই বার্তার অডিও ক্লিপ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় প্রসিকিউশন। একইসাথে অডিও রেকর্ডিংয়ের লিখিত স্ক্রিপ্টও দাখিল করা হয়।
ওয়্যারলেস বার্তায় হাবিবুর রহমান সেদিন বলেছিলেন, 'আমাদের সকল অফিসার যে যেখানে আছেন ডিউটি করছেন আমাদের নিজের জীবন সম্পদ রক্ষা, অফিস আদালত রক্ষা, জনগণের জীবন সম্পদ রক্ষা করার জন্য আপনার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। আমি বারবার...বলেছি, নির্দেশ দিয়েছি, আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছি, যেখানে যেমন সিচুয়েশন (পরিস্থিতি) সেভাবে... আপনারা করবেন আপনারা নিলিং পজিশনে গিয়ে হাঁটু গেঁড়ে, হাঁটু গেঁড়ে কোমরের নীচে আপনারা গুলি করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবেন, ওভার।'
গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল সোমবার সূচনা বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তার বক্তব্যে ওই অডিও রেকর্ডের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে অডিও রেকর্ডে কী আছে, তা ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনান তিনি।
এ মামলায় হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার দুজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন।
চানখাঁরপুলের মামলায় আট আসামির সবাই পুলিশের সাবেক সদস্য। তাদের মধ্যে হাবিবুর রহমান, ডিএমপির তৎকালীন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল ও শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন সুনির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী তৎকালীন কনস্টেবল সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলামের গুলিতে চানখাঁরপুল ও আশপাশের এলাকায় ছয়জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যার নির্দেশের অডিও ক্লিপস উদ্ধার করা হয়েছে। সেই নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করে কনস্টেবল শেখ শফিক মোহাম্মদ গত বছরের ১৮ জুলাই ডিএমপি কন্ট্রোল রুমে একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন।