কক্সবাজারের ৯ বালুমহালের ইজারা স্থগিত, দোষীদের তালিকা চাইলেন হাইকোর্ট

কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, রামু ও উখিয়া উপজেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে এবং এর কাছাকাছি ৯টি বালুমহালের ইজারা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত ইজারা গ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তিদের তালিকা চেয়েছেন আদালত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (১০ আগষ্ট) বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
স্থগিতাদেশের পাশিাপাশি ওই ৯টি বালুমহাল বিধি-বহির্ভূতভাবে ইজারা প্রদানের উদ্দেশ্যে তালিকাভুক্ত করা কেন বেআইনি হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
একইসাথে জারি করা রুলে আদালত ওই বালুমহালগুলো বিলুপ্ত ঘোষণার মাধ্যমে এবং ইজারাযোগ্য বালুমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে—বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর ও ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে সংরক্ষিত এবং রক্ষিত বনাঞ্চল সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না— তা জানতে চেয়েছেন।
এছাড়া বালু উত্তোলনের ক্ষতি নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না— তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ও কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক; কক্সবাজার জেলার বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার; বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক, কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা; কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, রামু ও উখিয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বেলার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব মো. গোলাম রহমান ভুঁইয়া।
বেলার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, ৯ বালুমহালের (কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী মৌজার খুটাখালী-১; রামু উপজেলার ধোলিরছড়া মৌজার ধলিরছড়া এবং পানিরছড়া খাল; উখিয়া উপজেলার উখিয়ার ঘাট মৌজার বালুখালী-১, উয়ালাপালং এবং রাজাপালং মৌজার দোছড়ি বালুমহল, পালংখালী মৌজায় পালংখালী; রাজাপালং মৌজার হিজলিয়া; রাজাপালং মৌজার ধোয়াংগারচর ও কুমারিয়ারছড়া বালুমহাল) ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত।
সেইসাথে দ্রুত এসব বালুমহাল, যা সংরক্ষিত এবং রক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে এবং সন্নিকটে বিদ্যমান তা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি উল্লেখিত বন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত ইজারা গ্রহীতাসহ অন্যান্য দোষী ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত এবং বালু উত্তোলনের ফলে উল্লেখিত বনের যে ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে প্রতিবেদন আকারে তিন মাসের মধ্যে তা আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।