ভারত শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ ও তার মন্ত্রীদের ক্রীতদাস ভাবত: আসিফ নজরুল

ভারত শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও তার মন্ত্রীদের ক্রীতদাস মনে করত বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস স্মরণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সেমিনারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সমালোচনা করে আইন উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ।
আসিফ নজরুল বলেন, 'শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের ধারণাই বুঝতেন না। তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও তার মন্ত্রীদের ক্রীতদাস ভাবত ভারত। হাসিনা এ দেশের পররাষ্ট্রনীতিকে নতজানু করে রেখেছিলেন। লুটপাট, নির্যাতন, গুম, খুন, আয়নাঘরের বীভৎসতার মাধ্যমে তিনি এ দেশের মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করেছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'হাসিনা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যা বলে পুরো জাতির মাঝে মিথ্যাবাদী, জোচ্চোর প্রজন্ম তৈরি করেছেন। তার ওপর সাইকোলজিক্যাল বা নিউরোলজিক্যাল গবেষণা করা উচিত।'
মাত্রা এবং ব্যাপকতায় শেখ হাসিনা নির্বাচনে কারচুপির সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছেন উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, '২০১৪ সালে বিনা প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে প্রদান এবং ২০২৪ সালের ডামি ও প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিলো।'
তিনি বলেন, 'পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভুতুড়ে নির্বাচন আর কখনও হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা শতাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের আখড়া বানানো হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও জুলাই আন্দোলনে নেমেছিলেন ছাত্র-জনতা। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার মূলোৎপাটনে।'
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে ।
তিনি আরও বলেন, 'চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষের সাহস, দৃঢ়তা ও একতার বিজয় হিসেবে চিহ্নিত।'
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জনকূটনীতি) শাহ আসিফ রহমান প্রমুখ ।