রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জামায়াত নেতার সুপারিশ: সমালোচনার জবাবে যা বললেন উপ-উপাচার্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের একটি ফেসবুক স্টোরি নিয়ে তীব্র সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে এক প্রার্থীর জন্য জামায়াতে ইসলামীর সাবেক এক সংসদ সদস্যের (এমপি) সুপারিশের কাগজ গত শনিবার রাতে উপ-উপাচার্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে স্টোরিতে আপলোড করা হয়। এরপরই এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
পরে এ নিয়ে একটা ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন ফরিদ খান। সেখানে তিনি লিখেছেন, 'আমার ফেসবুক স্টোরিতে একজন আবেদনকারীর প্রবেশপত্র কীভাবে আপলোড হয়েছে বুঝতে পারিনি। তবে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ছেলে বেশকিছু সময় গেম খেলছিল। তখন হয়তো ভুলবশত স্টোরিতে এসে গেছে।'
তিনি আরও লিখেছেন, 'উল্লেখ্য, প্রতিদিনই কোনো না কোনো আবেদনকারী বা তাদের পক্ষে বিভিন্ন সূত্রে সাক্ষাৎ করতে এসে সিভি-প্রবেশপত্র দিয়ে যায়, আবার অনেকে ফোন করে আবেদনকারীর প্রবেশপত্র ওয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে, কেউ টেক্সট করে সুপারিশ পাঠায়। রুয়ার (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন) নির্বাচনের সময় একজন আলামনাস যিনি সাবেক এমপি ছিলেন উনার সাথে পরিচয় হয়। কয়েকদিন আগে উনি ফোন করে উনার এলাকার একজন আবেদনকারীর কথা বলেন এবং তার প্রবেশপত্র সেন্ড করেন। পরিচিত অনেকেই এ রকম সুপারিশ করেন। তাদের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, বন্ধু, সহকর্মী, রাজনীতিক অনেকেই আছেন। এই মুহূর্তে আমার অফিসে এবং মোবাইল ফোনে ডজন খানিক এ রকম সুপারিশ আছে। তবে এগুলো কোনোভাবেই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে না।'
সবশেষে তিনি লিখেছেন, 'আশা করি বিষয়টি নিয়ে কেউ ভুল বুঝবেন না। ভুলবশত এই স্টোরির জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি। ধন্যবাদ।'
উপ-উপাচার্যের ফেসবুক স্টোরিতে ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে প্রভাষক পদের আবেদনকারী আজমীরা আফরিনের প্রবেশপত্রটি দেখা যায়। প্রবেশপত্র অনুযায়ী, আজমীরা আফরিন আগামীকাল সোমবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন। প্রবেশপত্রটির ওপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা মো. লতিফুর রহমানের সুপারিশ ছিল। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। লতিফুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
এদিকে উপ-উপাচার্যের ফেসবুক স্টোরিতে প্রবেশপত্রটি প্রকাশিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর তা মুছে ফেলা হলেও বিষয়টি নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।