'সমন্বয়ক' পরিচয়ে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় চাঁদাবাজি: আরেক আসামি অপু গ্রেপ্তার

গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক অপুকে আজ সকালে (১ আগস্ট) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
নাসিরুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় পলাতক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্য পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তাদের নেতৃত্বে ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক (সদ্য বহিষ্কৃত) জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় হুমকি-ধামকি ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু, আর বাকি ৫ লাখ রিয়াদ।
পরবর্তীতে চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে পুলিশের ফাঁদে পড়ে চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার হন। এরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়া, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, আমিনুল ইসলাম।
তাদের সবাই 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' ও 'গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ'-এর বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয় তাদের।
এদিকে আজ বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) তালেবুর রহমান বলেন, অপু এবং রিয়াদ প্রথমে গুলশানের ওই বাসাটিতে গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। 'প্রথম দিন তারা ১০ লাখ টাকা নেন। পরদিন ১৯ জুলাই তারা বাকি ৪০ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য আবার ওই বাসায় যান। ওইদিন টাকা না পাওয়ায় তারা ২৬ জুলাই লোকজন নিয়ে সেখানে যান। ওই দিন সিদ্দিক জাফর আহমেদ পুলিশকে ফোন করে সহায়তা চান। পরে পুলিশ রিয়াদসহ পাঁচজনকে হাতে-নাতে আটক করে। এ সময় অপু পালিয়ে যান।
এ চাঁদাবাজির চক্রে অন্য কোনো ব্যক্তি বা রাজনীতিবিদ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।