৩ নির্বাচন পর্যালোচনা কমিটিকে কমিশনে রূপান্তর, প্রতিবেদন জমার সময় বাড়ল এক মাস

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত জাতীয় তিন নির্বাচন পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন একটি কমিশন গঠন করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। গত ২৬ জুন এই তিনটি জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচনায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল সরকার। নতুন প্রজ্ঞাপনে ওই কমিটিকে কমিশনে রূপান্তর করা হয়েছে।
আগের কমিটির সদস্যদেরই নতুন কমিশনে বহাল রাখা হয়েছে এবং তাদের কার্যপরিধিও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কমিশনকে প্রতিবেদন দেওয়ার সময়সীমা এক মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। এর আগের কমিটিকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এসব নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে কৌশলে একটি নির্দিষ্ট দলকে নির্বাচিত করার অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয় তদন্ত ও পর্যালোচনার জন্যই এই কমিশন গঠন করা হলো।
নতুন কমিশনের সভাপতি হচ্ছেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইন। অন্যান্য সদস্যরা হলেন — সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-১) শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ, ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম।
কমিশনের কার্যপরিধি
কমিশনকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক, তদারকি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সীমাবদ্ধ করা, জনগণের ভোটাধিকার বিঘ্নিত করা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা, এবং তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ বিশ্লেষণের মাধ্যমে দায় নির্ধারণের দায়িত্বও কমিশনের ওপর অর্পিত হয়েছে।
কমিশনকে ভবিষ্যতের জাতীয় ও স্থানীয় সব নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়, সে লক্ষ্যে সুপরিকল্পিত সুপারিশ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
কমিশন প্রয়োজনে যেকোনো দপ্তরের নথিপত্র তলব ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। তারা দেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে এবং নির্বাচন কমিশন লজিস্টিক ও তথ্য সহায়তা প্রদান করবে।