চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী

টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে হওয়া এই বৃষ্টিতে অল্প সময়ের মধ্যেই নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
এদিকে, রাস্তায় পানি জমে চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। এ সুযোগে রিকশা ও সিএনজি চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন, যা সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে নগরের চকবাজার, বাকলিয়া, মুরাদপুর, শুলকবহর, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, পাঠানটুলী, ডিসি রোড, বড়পোল, মহুরিপাড়া, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক, কাতালগঞ্জ, ২ নাম্বার গেইট সহ নগরীর অনেক এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমেছে। কোথাও কোথাও কোমর সমান পানি দেখা গেছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মী কামরুল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্কে (টিবিএস) বলেন, 'সকাল ৯টায় অফিসের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি নিচতলায় পানি জমে গেছে। বাধ্য হয়ে বাসা থেকেই কাজ করছি।'
কলেজশিক্ষার্থী আনিস জামাল টিবিএসকে বলেন, 'বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাসা থেকে বের হয়েই বিপাকে পড়েছি। গাড়ি পেতেও ঝামেলা হচ্ছিল, পরে বাসায় চলে আসছি।'
বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলেও দেখা দিয়েছে মারাত্মক সংকট। অনেক জায়গায় সড়কে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। এতে অফিসগামী মানুষদের পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে। এ সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন রিকশা ও সিএনজি চালকরা।
কসমোপলিটন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, 'সকালে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে বের হয়েছি, কিন্তু সড়কে পানি থাকায় হেঁটে যাওয়া যাচ্ছিল না। রিকশাচালকও ৩০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নিলেন।'
এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোগান্তির অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন অনেকে।
ফেসবুকে মো. শরীফ নামের একজন লেখেন, 'সিরাজ-উদ-দৌলা রোডে হাঁটু পানি; ২ কিলোমিটার যানজট। বিকল্প রাস্তা ব্যবহার না করলে অফিসে পৌঁছানো কঠিন। বেসরকারি চাকরিজীবীদের একদিনের বেতন কাটা পড়তে পারে।'
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মাহমুদুল হাসান টিবিএসকে বলেন, 'আজ চট্টগ্রামে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে বৃষ্টির প্রবণতা ধীরে ধীরে কমে আসবে।'