দেশে সবার ঠাঁই হলেও আ.লীগের হবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ

বাংলাদেশে সবার ঠাঁই হলেও আওয়ামী লীগের হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আজ বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গণে এনসিপির 'জুলাই পদযাত্রা'র অংশ হিসেবে আয়োজিত ৪৪তম জেলা সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 'আগুনে যখন মাইলস্টোন জ্বলছে, আওয়ামী লীগ তখন এসেছে আলু পোড়া খেতে। বাংলাদেশে সবার ঠাঁই হলেও—আওয়ামী লীগের ঠাঁই হবে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দলটিকে প্রতিহত করতে হবে।'
তিনি বলেন, প্রিয় মা-বোনেরা, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আপনাদের চার কোটি সন্তানকে হত্যা করা হবে। আপনারা সবাই যে দলই করুন, আওয়ামী লীগকে এ দেশে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
মাইলস্টোনের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, 'ধ্বজভঙ্গ বিমান' কেন চলবে, সরকারকে তার জবাব দিতে হবে। লাশের সংখ্যার বিভ্রান্তি দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, কুমিল্লা হবে এনসিপির ক্যান্টনমেন্ট। সুরা লোকমানে আয়াত আছে, জমিনের মধ্যে তোমরা দম্ভ ভরে চলো না। হাসিনা দম্ভ করে বলেছিল, কুমিল্লা নামে বিভাগ হবে না। আমরা বলছি, কুমিল্লা নামেই—কুমিল্লা বিভাগ হবে।

হাসনাত বলেন, কুমিল্লার মানুষকে অনেক সংগ্রাম করে চলতে হয়েছে। সন্তানদের বিদেশ পাঠিয়ে অর্থ উপার্জন করতে হয় এই জেলার মানুষদের। রাষ্ট্রের কোনো অর্থ দিয়ে কুমিল্লায় উন্নয়ন হয়নি। এই শাসনগাছা ফ্লাইওভার কোনো কাজে আসেনি। শহরে যানজট লেগেই থাকে। কুমিল্লার মানুষ নিজেরা সার্ভাইভ করছে। সরকারকে কুমিল্লার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর ভেতরে দুই কিলোমিটার রাস্তাও ঠিক নাই। সরকারকে বলব, যদি কুমিল্লার উন্নয়ন না করেন, আমরা নিজেরাই পয়সা তুলে কাজ শুরু করব।
'কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে দুইটা বাস একসাথে চলতে পারে না। নাম দিয়েছে জাতীয় মহাসড়ক। কুমিল্লাকে যেভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে, এর ক্লাসিক উদাহরণ আর একটাও নাই। এই জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এই কুমিল্লার ছেলেরা। সত্য বলতে, সাহস দেখাতে কুমিল্লার মানুষ পিছপা হয় না। হাসিনা কুমিল্লার চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাত। ফেরাউনের পয়দা হয়েছে ঢাকায়, মুসার পয়দা হয়েছে কুমিল্লায়, ফেরাউন পালিয়েছে দিল্লিতে'- যোগ করেন তিনি।
এনসিপি কুমিল্লা মহানগরের আহ্বাযক সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিপা, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসুদ, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, জাতীয় যুব শক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম, কুমিল্লা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক নাভিদ নওরোজ শাহ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফসা জাহানসহ এনসিপির নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী।
সভার শুরুতে মাইলস্টোনে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, শুধুমাত্র সিস্টেমের গাফিলতির কারণে আর কত রক্ত দিতে হবে জানি না। এই সিস্টেম বদল করতে হবে। জুলাই সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার বার্তা দিতে হবে। রাজপথে কুমিল্লার অগ্রসেনানীর সংখ্যা বেশি, কমিটিতে কুমিল্লা প্রাধান্যও বেশি পেয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে বিমান দেশের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেই বিমান আমাদের হত্যা করে। রানা প্লাজা, তাজরীন ফ্যাশনের কথা ভুলে যাইনি। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। অপমৃত্যুর ঘটনা কমাতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।