আমাদের সামনে আরেকটা লড়াই করতে হবে, সেটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের সামনে আরেকটা লড়াই করতে হবে, আর সেটা হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করাসহ সাত দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ছাত্র-জনতা নিজেদের জীবন বাজি রেখে এ দেশের মুক্তি এনে দিয়েছেন। আমরা যেন তাদের শিশু বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করি। এ আন্দোলন না হলে আজ যারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলছেন, তারা কোথায় থাকতেন? তাই আসুন তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ যে নেয়ামত দিয়েছেন, তা অবজ্ঞা না করি।
তিনি বলেন, যদি এগুলো আমরা পরিহার করতে না পারি, যারা পারবেন না, তাহলে বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদের রূপ তাদের মধ্যে নতুন করে বাসা বেঁধেছে। আমরা এ দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চাই না।
'আমরা কথা বলি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। আমাদের সামনে আর একটা লড়াই করতে হবে, আর সেটা হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে', যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'যতদিন আল্লাহ হায়াত দিয়েছেন, ততদিন মানুষের জন্য লড়াই করব, ইনশা আল্লাহ। মুক্তি অর্জন হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার জন্য ক্ষমতায় যেতে চায়।
'আমি লক্ষ জনতাকে সাথে নিয়ে ঘোষণা দিচ্ছি- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি ক্ষমতায় যায়, সরকার গঠনের পরে কোনো এমপি, কোনো মন্ত্রী সরকারের কোনো ট্যাক্সবিহীন গাড়িতে চড়বে না। কোনো এমপি, কোনো মন্ত্রী তার নিজের হাতে কোনো টাকা চালাচালি করবে না। এমপি, মন্ত্রীদের স্ব স্ব আসনের বরাদ্দকৃত টাকা খরচের পুরো প্রতিবেদন বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে', বলেন তিনি।
আমিরে জামায়াত আরও বলেন, চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করব না, দুর্নীতির প্রশ্রয় দেব না। এমন বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে সহযোদ্ধাদের আমরা বলছি, তোমাদের সাথে আমরা আছি। আমি আজ আমির হিসেবে আসিনি, আমি শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, আমি বয়স্কদের সহযোদ্ধা।
এর আগে মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান ডা. শফিকুর। কিছুক্ষণ পর তিনি উঠে বক্তব্য দিতে শুরু করেন। এরপর আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে মঞ্চে বসে থেকে বক্তব্য দেন।
আজ দুপুর ২টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডা. শফিকুর।
দুপুর ২টা থেকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা থেকেই উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। আজ ভোর থেকেই রাজধানীতে ঢল নামে দলটির নেতা-কর্মীদের।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে রাজধানীতে এসে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন। দাঁড়িপাল্লা ও দলীয় মনোগ্রাম সম্বলিত টি-শার্ট, পাঞ্জাবি পরে এসেছেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী, অনেকের হাতে দলীয় প্রতীক দাাঁড়িপাল্লা দেখা গেছে।