আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক: রিজভী

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দল থেকে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও—প্রশাসন কোন সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, বিএনপি'র নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সাথে জড়িত—তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দলের ভেতরে থেকে অপকর্মের সাথে যুক্ত হলে, তাকে কোনভাবেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশকিছু নেতা-কর্মীকে বহিস্কার, অব্যাহতি প্রদান, পদ স্থগিত, কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, দলের পক্ষ থেকে এহেন চলমান সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে গণমাধ্যমে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দলের পক্ষ থেকে বারবার অপরাধী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়ছেন বলে স্পষ্টত: প্রতীয়মান হয়। এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সমাজ সংস্কৃতি, সভ্য আচরণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রশাসনিক এই নিষ্ক্রিয়তার কারণে জনগণের এখন জীবনমরণের প্রশ্ন।
রিজভী আরও নেতা বলেন, গণতন্ত্রের স্থায়ী পুনরুজ্জীবন ও ঐতিহাসিক সার্থকতা নির্ভর করছে—রাষ্ট্র ও সমাজে শান্তি ও স্থিতির ওপর। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসন অতীব জরুরি। কিন্তু আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও তাদের দোসরদের 'আন্ডারগ্রাউন্ড' তৎপরতার কারণে দুস্কৃতিকারীরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টির আলামত দেখা যাচ্ছে।
বিএনপি সমাজবিরোধী কোন ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান দলে বরদাশত করে না বলেও জানান রিজভী আহমেদ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সময়ে নানাবিধ সামাজিক অপরাধের বিভিন্ন মাত্রার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই 'মব কালচার' এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে 'মব কালচার' এর নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে। আবার অন্যদিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপি'র নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরী সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা, এবং নির্বাচন পেছানোর সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে জনগণ মনে করে। শেখ হাসিনার আমলের অদ্ভূত উন্নয়নের বয়ানের মতো—এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরনের বয়ান দেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাত্তার পাটোয়ারী, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ।