বাংলাদেশের নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: ফখরুল

বাংলাদেশের নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চীন মুখিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি জানান, চীনের পলিসি ব্যুরোর সদস্য সি লি হংসং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশটিতে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং দ্রুতই [বাংলাদশের] একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আজ (৩০ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি চীন সফর নিয়ে অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, 'এই সফরে চীনা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা করেছি।'
ফখরুল বলেন, এই সফরে দেশের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে চীন থেকে ঋণ পরিশোধ সময়সীমা বাড়ানো, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতার বিষয়ে তাদের সহায়তা চেয়েছে বিএনপি।
তিনি জানান, বিএনপির প্রতিনিধি দল ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ ও ব্লু ইকোনমিসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছে।
ফখরুল বলেন, চীনা কর্মকর্তারা এসব প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য লি হংসংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি 'এক চীন' নীতির প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি এমন ধরনের চীনা সহযোগিতার পক্ষে কথা বলে, যা বাংলাদেশের জনগণের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেয় এবং পারস্পরিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়।
তিনি জানান, সফরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদি একটি রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যেটিকে বিএনপি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের প্রয়োজনের কথা বলার পর চীন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তারা তিস্তা নিয়ে প্রস্তাব দিলে আমরা ভবিষ্যতে সেটাকে ইতিবাচকভাবে দেখবো।
এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপত্তায় স্বেচ্ছা ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে চীনের অধিকতর ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি। চীন আন্তরিকতার সঙ্গে মিয়ানমারকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া যায়।
শনিবার (২৮ জুন) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির ৯ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঁচ দিনের চীন সফর শেষে দেশে ফেরেন।
সফরকালে তারা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন।
প্রতিনিধি দল কমিউনিস্ট পার্টির জাদুঘর, চীনের গ্রেট ওয়াল, বেইজিংয়ে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন, শি'আনে একটি স্মার্ট সিটি ও হাই-টেক শিল্প উন্নয়ন অঞ্চল, শি'আন জিয়াওটং বিশ্ববিদ্যালয় এবং শানসি প্রদেশের একটি গ্রামসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করে।
প্রতিনিধি দলে মির্জা ফখরুল ছাড়া আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার।