খুলনায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হলেন প্রেস সচিব

র্দীঘ আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর খুলনা প্রেস ক্লাব থেকে মুক্ত হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার রাত সাড়ে ৮ টায় প্রেস ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি মুক্ত হন।
এর আগে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনা প্রেস ক্লাব পরিদর্শনে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণের দাবিতে শফিকুল আলমকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
গত ২৫ জুন থেকে কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তারা প্রতিবাদ জানিয়ে কমিশনারের অপসারণ দাবি করছে।
এই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুর ৩টা থেকে তারা কেএমপি হেড কোয়ার্টারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। পরে প্রেস সচিব শফিকুল আলমের খুলনায় উপস্থিতির খবর পেয়ে তারা খুলনা প্রেস ক্লাবে গিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, 'খুলনায় পুলিশলীগের মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল, বহু অপকর্মের হোতা ও ছাত্র জনতাকে নির্যাতনকারী চার মামলার আসামি এসআই সুকান্তকে রাতের আঁধারে ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার সূত্রপাত। তবে শুধু এটিই নয়, পুলিশ কমিশনারের সামগ্রিক কার্যক্রমে খুলনার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ।'
বাপ্পি আরও বলেন, 'মুজিবপ্রেমী লেখক জুলফিকার আলী হায়দার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর খুলনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত চার মাসে অন্তত তিন ডজন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। খুলনার মানুষ মনে করছে, তিনি সন্ত্রাসী ও লীগারদের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বিপ্লবী ছাত্র জনতা।'
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, 'আন্দোলনকারীরা স্যারের [প্রেস সচিব] সঙ্গে কথা বলার জন্য অবস্থান করছিল। স্যার সময় দেওয়ায় তারা প্রেস ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় কথা বলছেন। পরিস্থিতি শান্ত এখন হয়েছে।'
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকেলে খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয়রা মারধর করে এসআই সুকান্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবে সেদিন রাতেই তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে আবারও তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।