ভারতের ভেতরে গাছে ঝুলন্ত মরদেহ: জাকারিয়ার আত্মহত্যার দাবি বিজিবির

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমা সীমান্তে ভারতের ভেতরে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া জাকারিয়া আহমদের মরদেহ বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ। জাকারিয়ার মৃত্যুকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই ধারণা করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভারতের মেঘালয়ের পিনারসালা থানা-পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। সেখানে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তও সম্পন্ন হয়।
বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিজিবির সিলেট ব্যাটালিয়ন-৪৮ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
নিহত মো. জাকারিয়া আহমদ (২৫) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছড়ারবাজারের লামাগ্রামের বাসিন্দা। তিনি মো. আলাউদ্দিনের ছেলে এবং গত সোমবার (১৬ জুন) কাকরাইল গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন।
বিজিবি জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মো. গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি উৎমা বিওপিতে এসে জানান, তার ভাতিজা জাকারিয়া সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে স্থানীয়রা সীমান্তের ১২৫৮/২০-এস পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ ভারতের ভেতরে একটি গাছে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
বিষয়টি জানার পর বিজিবি গিয়াস উদ্দিনকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয় এবং নিজ ব্যাটালিয়নকে অবহিত করে। এরপর বিএসএফকে জানানো হলে তারা পিনারসালা থানা-পুলিশকে খবর দেয়।
ঘটনাস্থল দুর্গম হওয়ায় এবং ভারী বর্ষণের কারণে পুলিশ সেখানে পৌঁছাতে বিলম্ব হয় বলে বিএসএফ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএফের সহায়তায় পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন দুপুরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আলোচনার পর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিক চাপে পড়ে জাকারিয়া আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে স্থানীয় সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজিবি সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক বলেন, ''লাশ ভারতের অভ্যন্তরে থাকায় আমাদের সদস্যরা সেখানে যেতে পারেনি। রাতেই পিনারসালা থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। শুক্রবার দুপুরে আমাদের উপস্থিতিতে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।''
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে জাকারিয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সীমান্তের ১২৫৭ মেইন পিলারের ২০ নম্বর ছাফ পিলারের কাছে ভারতের ভেতরে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর জাকারিয়ার পরিবার মরদেহ শনাক্ত করে।
নিহতের বাবা আলাউদ্দিন বলেন, 'জাকারিয়ার কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। বুধবার রাতে আমরা একসঙ্গে খেয়ে ঘুমিয়েছিলাম। সকালে সে বাড়ি থেকে বের হয়। বেলা ১১টার দিকে শুনি, সে সীমান্তের ওপারে গাছে ঝুলছে।'