ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার, আপাতত জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা

সরকার এখনই দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। তবে এখনই দাম পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত আসছে না।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির (এসিসিজিপি) ২৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চলমান যুদ্ধের প্রভাবে দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি, সেগুলোর ওপর এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে অবশ্যই চাপ আসবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ কোনো প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ আমরা যে এলএনজি ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছি, তা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে নতুন অর্ডারে হয়তো প্রভাব পড়তে পারে। জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিকল্প চিন্তা করছে, কারণ জ্বালানির পুরোটাই আমদানি নির্ভর।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে শুধু জ্বালানি নয়, সার ও জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে হরমুজ প্রণালীতে। তবে আমার মনে হয়, যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না। ফলে সরকার আপাতত দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।
এলএনজি ও সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন
বিশ্ববাজারে অস্থিরতার মধ্যেই স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে এসিসিজিপি। এই এলএনজি আগামী ১৫-১৬ জুলাই দেশের বন্দরে পৌঁছাবে।
সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা জানান, এই এলএনজি পুরোনো দরেই কেনা হচ্ছে। আমেরিকান কোম্পানি 'এম/এস এক্সেলারেট এনার্জি' এলপি প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪ দশমিক ৯৪ ডলারে গ্যাস সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬১২ কোটি ৫৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকা। এক কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি থাকে।
জানা গেছে, পেট্রোবাংলা ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপত্র চেয়েছিল, যার মধ্যে তিনটি প্রস্তাব জমা দেয়। প্রথমে যুক্তরাজ্যের 'টোটালএনার্জিস' প্রতি ইউনিট ১৫ দশমিক ১৭ ডলারে সরবরাহের প্রস্তাব দেয়। পরে এক্সেলারেট এনার্জি কম দরে প্রস্তাব দিলে সেটিই অনুমোদিত হয়।
এছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবে, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) চলতি অর্থবছরের ১৭তম লটের আওতায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়া কিনবে। এতে প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৮৩ দশমিক ২৫ ডলার, মোট ব্যয় হবে প্রায় ১৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের জমিতে হবে বহুতল ভবন
ময়মনসিংহে অবস্থিত লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের ১ দশমিক ৯৭ একর খালি জমিতে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে এই জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এবং বর্তমানে এখানে কাঁচা পাট কেনাবেচা চলছে। ভবিষ্যতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় এই জায়গায় ভবন নির্মাণ করা হবে।