আমি ৫০ বার ফোন করলেও সম্ভবত কাজ হতো না, কিন্তু টাকা দেওয়ার পরই কাজ হয়ে গেল: অর্থ উপদেষ্টা

বাংলাদেশের সেবা খাতে, বিশেষ করে সরকারি অফিসগুলোতে ঘুষ ও হয়রানির কথা স্বীকার করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের সেবা খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি বিরাজমান। তিনি বলেন, উপদেষ্টা হওয়ার আগেও তাকে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিতে হয়েছে, যাতে নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়ে যায়।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত 'ট্যাক্স রিপ্রেজেন্টেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিআরএমএস)' সফটওয়্যারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি অন্যদের অভিজ্ঞতার কথাও শোনান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমি নিজেও একসময় নিরুপায় হয়ে ঘুষ দিয়েছি, যাতে কাজটি সময়মতো হয়। বলেছি, এটা চা-নাশতার টাকা। মানুষ এসব দুর্নীতি থেকে মুক্তি চায়। আপনারা মানুষকে সেবা দিন। মানুষ ভালো সেবা পেলে সেবার মূল্য দিতেও কৃপণতা করবে না।
তিনি বলেন, 'সরকারি সেবা পেতে অনেক সময় লেগে যায়। আমি নিজেও তা অনুভব করি।'
সাবেক এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ফোন সংযোগ নিতে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন বলেন, 'আমি যদি ৫০ বার ফোন করতাম, সম্ভবত কাজ হতো না। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরই কাজ হয়ে গেল।'
অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও কর আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরা অনেক সময় মিথ্যা বলেন বা সত্য গোপন করেন। কিন্তু আমরা চাই আইনজীবীরা যেন তথ্য ও পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করেন। আইনজীবীরা যেন সরকারকে অন্ধকারে না রাখেন।'
তিনি আরও বলেন, আইনজীবীরা আদালতের কর্মকর্তা হিসেবে দ্রুত ও কার্যকর সেবা দেবেন- এটাই প্রত্যাশা। সেবা দিতে বিলম্ব করা এক ধরনের হয়রানি।'
আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা যদি দ্রুত কাজ করেন, তাহলে প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত শেষ হবে। এতে জনগণের উপকার হবে, আর আপনাদের আয়ের পরিমাণও বাড়বে।'