ন্যূনতম নিলামমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে চায়ের নিলাম বর্জন ক্রেতাদের

চায়ের ন্যূনতম নিলামমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে গতকাল রোববার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত নিলামে অংশ নেয়নি স্থানীয় ও ব্র্যান্ডেড কোম্পানির ক্রেতাদের একটি অংশ।
ফলে আন্তর্জাতিক চা নিলামকেন্দ্রে বেশিরভাগ চা-ই অবিক্রীত থেকে যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং নতুন ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করতে চা বোর্ড আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ক্রেতা সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিটিএবি) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, 'চায়ের নিলামমূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চা ক্রয় না করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'চা বোর্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আজকের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকে ন্যূনতম নিলামমূল্য কমানোর সিদ্ধান্ত এলে ভবিষ্যতে নিলামে সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়বে।'
ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ, আমদানিতে ৮৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ, স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান এবং রেশনসহ চা বাগানগুলোর সুরক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও 'রুগ্ণ বাগান'-এর কারণে দেশের চা শিল্প দিন দিন গভীর সংকটে পড়ছে।
তাদের দাবি, এসব বাগান পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে বরং প্রতিবছর ন্যূনতম নিলামমূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
ক্রেতারা আরও অভিযোগ করেন, এই ন্যূনতম মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাগানগুলো নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়েও গুণগত মান ও উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না।
তাদের মতে, চা বোর্ড নিলামের মূল পদ্ধতি পরিবর্তন করে ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর যে পদক্ষেপ নিয়েছে, এতে সাধারণ চা ভোক্তারা অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়বেন। পাশাপাশি যেসব ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চা কিনতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে, তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
ঈদের ছুটির পর সোমবার অনুষ্ঠিত ৬ নম্বর চা নিলামে বেশিরভাগ ক্রেতা অংশ নেননি বলে জানিয়েছে ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। চা বোর্ডের নির্ধারিত ন্যূনতম নিলামমূল্য পরিবর্তনের প্রতিবাদে ক্রেতারা নিলাম বর্জন করেন। তবে কিছু ব্র্যান্ডেড কোম্পানি সীমিত পরিমাণে চা কিনেছে।
ফলে দিন শেষে মোট চায়ের ৫২ শতাংশই নিলাম থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ ঈদের আগে অনুষ্ঠিত ৫ নম্বর নিলামে ৭৫ শতাংশ চা বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে, নিলামমূল্যের বাধ্যবাধকতায় শেষ বিকেলে 'লিকার রেটিং' কমিয়ে চা বিক্রির অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ক্রেতা।
চা বোর্ডের নথি অনুযায়ী, ঈদের পর থেকে চায়ের ন্যূনতম নিলামমূল্য লিকার রেটিংয়ের ওপর ভিত্তি করে কেজিপ্রতি ১০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। নতুন এই ব্যবস্থায় বাগান থেকে চা আসার পর ব্রোকারদের সেগুলো সাতটি গ্রেডে 'লিকার রেটিং' অনুযায়ী মূল্যায়ন করতে হচ্ছে।