খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি; অংশীদার না হয়েও যেভাবে বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন মিজানুর

খুলনার প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়— নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনির্ভাসিটির অনুমোদিত অংশীদার না হয়েও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছেন মো. মিজানুর রহমান। আর এই পদ বাগিয়ে নিতে সাবেক চেয়ারম্যানকে না জানিয়েই— তিনি গোপন সভা করে নিজেই নিজেকে নির্বাচিত করেছেন। উল্লেখ্য, চেয়ারম্যানই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতির নির্ধারক ব্যক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গতকাল সোমবার সকালে নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) ড. সাহিদা খানম স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় মো. মিজানুর রহমানকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিরাজুল হক চৌধুরী বলেন, 'আমাকে কিছু না জানিয়ে মিটিং করা হয়েছে। ওই মিটিংয়ে অধিকাংশ ট্রাস্টি মেম্বার উপস্থিত ছিলেন না, আর যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সাথে চেয়ারম্যান পরিবর্তন প্রসঙ্গে কোন আলোচনা করা হয়নি। কৌশলে এই পদটি তিনি দখল করে নিয়েছেন। আর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অনুমোদিত অংশীদার (ট্রাস্টি) নন। যিনি অনুমোদিত অংশীদার নন, কী করে তিনি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। এসব করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিলেন। বিভিন্ন আইনগত বাধার কারণে এতে বিপাকে পড়বেন হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা।'
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টারের কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ২১ জন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হতে পারেন। ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ জন ট্রাস্টি ছিলেন। বাকি তিনজন ট্রাস্টির পদ পূরণের জন্য গত ৩০ জানুয়ারি মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দ হাফিজুর রহমান ও মো. আজিজুল হকের নাম ট্রাস্টি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) পাঠানো হয়। তবে আরজেএসসি থেকে তাদেরকে এখনো ট্রাস্টি হিসেবে অনুমোদন করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'আমি বেশ কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করে আসছি। ২১ তারিখের মিটিংয়ে সবাই আমাকে চেয়ারম্যান বানিয়েছে।'
অনুমোদিত অংশীদার না হয়ে কীভাবে চেয়ারম্যান হলেন— এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে অনুমোদনের জন্য ইউজিসিতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই আমি চেয়ারম্যান হিসেবে গণ্য হব। আর যদি তারা অনুমোদন না দেয়— তাহলে আমি চেয়ারম্যান হব না। আর আমাকে ট্রাস্টি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আরজেএসসিতে তো আবেদন করা হয়েছে। এটা অনুমোদন হতে একটু সময় লাগে।'