বিমানের কক্সবাজার-ঢাকা ফ্লাইটের চাকা খুলে পড়ার ঘটনায় ২ তদন্ত কমিটি গঠন

গত ১৬ মে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের চাকা খুলে নিচে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় দুইটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ওই সময় বিমানে ৭১ জন যাত্রী ছিলেন।
আজ সোমবার (১৯ মে) প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিমানের ফ্লাইট সেফটি প্রধানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টরেটের অধীনে আরেকটি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
দুটি কমিটির কাজ হলো: ঘটনার মূল কারণ উদঘাটন করা, সংশ্লিষ্ট রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত শর্ত ও নথিপত্র পর্যালোচনা করা এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করা।
তদন্ত কমিটিগুলোর তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিমানটি ড্যাশ-৮ মডেলের, যা কানাডার ডি হ্যাভিল্যান্ড এয়ারক্রাফ্ট নির্মিত। ঘটনার সময় কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র কিছু সময় পর দুপুর ১টা ২১ মিনিটে বিমানের একটি চাকা বিচ্ছিন্ন হয়।
কক্সবাজার কন্ট্রোল টাওয়ার ফ্লাইট বিজি-৪৩৬-এর পাইলটকে এই পরিস্থিতি জানায়। পাইলট ঢাকা পর্যন্ত যাত্রা অব্যাহত রেখে জরুরি অবতরণ ঘোষণা করেন এবং নিরাপদে বিমানটি অবতরণ করান।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, চাকা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণ সম্ভবত বিয়ারিংয়ের ব্যর্থতা। তবে সঠিক কারণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর নিশ্চিত হবে।
সতর্ক থাকতে বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ঢাকায় স্থাপিত সকল ড্যাশ-৮ বিমানের চাকা তৎক্ষণাৎ পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডার কাছে দ্রুত প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, বিমানের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ওই বিমানটির যাত্রীসেবা পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ ঘটনাটি বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
নির্মাতার নির্দেশনা অনুযায়ী সংশোধনী কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বিমানটি পরিদর্শন করবে। অনুমোদনের পরই বিমানটিকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ বিমানে চাকা সংক্রান্ত ৫৯টি ঘটনা ঘটেছে। ড্যাশ-৮ কিউ৪০০-এর ল্যান্ডিং গিয়ার সিস্টেম 'রিডান্ডেন্ট' অর্থাৎ একক চাকা হারানোয় পুরো ফ্লাইটের নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি নেই।