চিন্ময়ের জামিনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ

সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২ মে) বাদ জুমা চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় বৈষম্যবিরোধী মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইবনে হোসাইন জিয়াদ বলেন, 'চিন্ময় ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছিল। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, চিন্ময়ের জামিন বাতিল করে তার বিচার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আবার রাজপথে উত্তালভাবে নামব।'
তিনি আরও বলেন, 'আগামী রবিবার শুনানি হবে। আমরা একেকজন আলিফ, ভারতের তাবেদার করতে দেবো না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, আপনারা যদি ভারতের গোলামী করেন, তাহলে পদত্যাগ করেন। হাসিনার মতো চলে যান।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবরার হাসান জিয়াদ বলেন, 'গত ৬ নভেম্বর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছিল ইসকন সন্ত্রাসী। তখনও কোনো কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশের হাত থেকে মাইক নিয়ে হত্যার ঘোষণা দিয়েছিল চিন্ময়। এরপর তারা আলফকে হত্যা করে। সেদিনই তাদের মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারত। কিন্তু চট্টগ্রামের তৌহিদী জনতা ধৈর্য ধরেছেন। অনেক আসামি কারাগারের বাইরে।'
তিনি আরও বলেন, 'ভারতীয় তাবেদারি করা ব্যক্তিদের বিচারকরা জামিন দিয়েছেন। আমরা সরকার ও আইন বিভাগকে বলতে চাই, আপনারা যদি তাবেদারি করেন, আপনাদের পতনের জিন্য মাঠে নামব।'
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট জমির উদ্দিন, আলিফের চাচাত ভাই আদনান হোসেন, রিদোয়ান হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, 'আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ইসকন মন্দিরে অস্ত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। চিন্ময়ের জামিন বাতিল করে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ইসকন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। নওফেল ভারতীয় এজেন্ড ছিলেন।
তারা বলেন, আমরা আসিফ নজরুলের কাছে প্রশ্ন রাখছি— গত ১৫ বছরে নির্যাতনের শিকার অনেককে জামিন দেওয়া হয়নি। জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামকে জামিন দেওয়া হয়নি। কীভাবে চিন্ময়কে জামিন দেওয়া হয়! যারা হামলা করেছে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। জামিন পেয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম জুলাই আন্দোলনকারী ১৯ জন সহযোদ্ধার নামে মামলা চলমান। আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের হবে। এর মাধ্যমে র, ইসকন ও ভারতীয় তাবেদার বিতারিত হবে।
গত ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
২৫ নভেম্বর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পরের দিন মঙ্গলবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন আইনজীবী।