জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংবিধান সংস্কার ও আ.লীগের বিচার প্রশ্নে একমত এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করেছে গণসংহতি আন্দোলন। বৈঠকে উভয় দলই জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে একমত হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার ও সংসদে নারীর আসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। তবে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণসংহতি আন্দোলনের দ্বিমত নেই।
তিনি বলেন, যারা গত ১৫ বছরে সংঘটিত গুম, খুন, হত্যা, হামলা, মামলা ও সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের যে হত্যাকাণ্ড, তাদের প্রত্যেককেই বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে দায়, তারও বিচার দেখতে চাই। আমরা চাই সংস্কারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম একটি ঐকমত্য দ্রুত তৈরি হোক। সেই সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়েও যাতে আমরা একটা ঐকমত্যে আসতে পারি।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সংস্কার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সাথে আমরা একমত। কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকলেও আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা করা হবে। এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছে। অন্যদিকে গণসংহতি আন্দোলনের ভিন্ন প্রস্তাব। তবে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না, এ বিষয়ে উভয় দলই একমত।
তিনি বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ এবং নির্বাচনের আগে সংস্কার কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
নাহিদ জানান, রাজনৈতিক জোট গঠনের জন্য নয়, সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমত গঠনের জন্যই বিভিন্ন দলের সাথে এমন বৈঠক চলবে।
নির্বাচনে জোট গঠন বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচনের বিষয়ে কোনো জোট গঠন নিয়ে আমরা এখনো আলোচনা করিনি। তবে রাজনৈতিক ঐক্য কিংবা আমাদের যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে এজেন্ডা এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছি।
তিনি আরও বলেন, 'এখনই রাজনৈতিক জোট নিয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। যেহেতু গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক দলে এসেছি, জনগণ নতুন যে গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে আমাদেরও হাঁটতে হবে।'
বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী ও অনিক রায়, যুগ্ম সদস্যসচিব ফরিদুল হক ও মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি ও মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, ইমরাদ জুলকারনাইন ও তরিকুল সুজন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অঞ্জন দাস।