সংস্কারের অংশ হিসেবে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকারি ক্রয়ে ই-জিপি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্বের অংশ হিসেবে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) ব্যবস্থার ব্যবহার শিগগিরই বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে সরকার।
ফলে সব ক্রয়কারীকেই ই-জিপির মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করতে হবে এবং দরদাতাদেরকেও ই-জিপির মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে হবে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জে আয়োজিত বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ)-এর কার্যাবলি ও ই-জিপি বিষয়ক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান সংস্থাটির পরিচালক (উপসচিব) লাবনী চাকমা।
তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারি ক্রয়ের প্রায় ৬৫ শতাংশ ই-জিপির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। এই হার শতভাগে উন্নীত করতে বিপিপিএ কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, 'সরকারি ক্রয় হচ্ছে জনগণের অর্থে, তাই একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এই ডিজিটাল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বিপিপিএ এবং ব্যবস্থাপনায় ছিল বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস (বিসিসিপি)।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে দেশে টেকসই সরকারি ক্রয়ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিপিপিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতা এবং অপচয় রোধে বাস্তবায়ন পর্যায়ের তত্ত্বাবধান জোরদার করতে চালু করা হয়েছে ই-পিএমআইএস ব্যবস্থা, যা ই-জিপির সঙ্গে সংযুক্ত। এই ব্যবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়নের রিয়েল-টাইম তথ্য অফিস থেকেই পাওয়া যায়।
কর্মশালায় জানানো হয়, ই-জিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান, যাচাই-বাছাই, মূল্যায়ন, চুক্তি সম্পাদন, বাস্তবায়ন ও অর্থ প্রদান ডিজিটালি সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।
এতে প্রক্রিয়া গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি জটিলতাও কমেছে।
বিপিপিএ জানিয়েছে, ই-জিপিতে ইতোমধ্যে ই-সিএমএস, দরদাতা ডাটাবেজ, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান এবং ই-অডিট যুক্ত করা হয়েছে।
আইবাস++ (সমন্বিত বাজেট ও হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি) সিস্টেমের সঙ্গেও ই-জিপির আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
এখন দরদাতারা অনলাইনে নিবন্ধন, নবায়ন, জামানত প্রদান এবং ডকুমেন্ট ক্রয়ের ফি পরিশোধ করতে পারছেন।
সরকারি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও ই-জিপির মাধ্যমে অনলাইনেই দরপত্র যাচাই-বাছাই, মূল্যায়ন, চুক্তি সম্পাদন, বাস্তবায়ন এবং চূড়ান্ত অর্থপ্রদান পর্যন্ত সম্পন্ন করতে পারছেন। ফলে ক্রয় প্রক্রিয়া আরও সহজ ও স্বয়ংক্রিয় হয়েছে।
কর্মশালায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সরকারি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, দরদাতাসহ ব্যাংকার ও স্থানীয় সাংবাদিক মিলিয়ে প্রায় ৭০ জন অংশ নেন।
২০১১ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেশে ই-জিপি চালু করে সরকার।