অবৈধ অটোরিকশায় না চড়ার, হকারদের থেকে না কেনার আহ্বান ডিএনসিসি প্রশাসকের

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় না চড়তে এবং ফুটপাতের অবৈধ হকারদের থেকে কেনাকাটা না করতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির অঞ্চল-৭-এর সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে আয়োজিত গণশুনানিতে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আমি যেখানেই গণশুনানিতে যাচ্ছি, দুটি সাধারণ অভিযোগ পাচ্ছি—ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করতে হবে, ফুটপাত ও রাস্তার অবৈধ হকার উচ্ছেদ করতে হবে।'
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো দেশের সব জায়গায় অবৈধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সবাই এগুলো বন্ধ করার দাবি তুলছেন, অথচ অনেকেই নিজেরাই এ অবৈধ যানবাহনে চড়ছেন। আমি অনুরোধ করব—আপনারা এসব অটোরিকশায় না চড়লে চালকেরা নিরুৎসাহিত হবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধান সড়কে অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করতে পারবে না—এ বিষয়ে আমরা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ডিএনসিসির পক্ষ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) একটি অনুমোদিত অটোরিকশার নকশা তৈরি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ প্রকল্প সফল হলে নির্দিষ্ট মানসম্পন্ন ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত অটোরিকশাগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে নির্ধারিত রুটে চলাচলের জন্য।
ফুটপাতের হকারদের থেকে কেনাকাটা না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'ঢাকা শহরের প্রতিটি এলাকায় বাজার ও শপিংমল রয়েছে। দয়া করে ফুটপাত বা রাস্তায় বসা অবৈধ হকারদের কাছ থেকে না কিনে বাজার থেকেই পণ্য ক্রয় করুন। আমরা নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি।'
ডিএনসিসির প্রতিটি অঞ্চলে গণশুনানিতে অংশ নিচ্ছেন প্রশাসক এজাজ। ইতোমধ্যে সাতটি অঞ্চলে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব শুনানিতে নাগরিকরা সরাসরি অভিযোগ, পরামর্শ ও সেবা–সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন, আর প্রশাসক উত্তর দেন।
প্রতিটি গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারীদের একটি ফরম দেওয়া হয়, যেখানে তারা লিখিতভাবে মতামত ও অভিযোগ জমা দেন।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সচেতনতাকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন, 'আমাদের কর্মীরা তো প্রত্যেকের বাড়ির ভেতরে যেতে পারে না। বাসার বাউন্ডারির ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় না। অথচ মশার প্রজনন ক্ষেত্র, ময়লা-আবর্জনা অনেক সময় বাড়ির ভেতরেই থাকে। দয়া করে নিজেরা ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন।'
গণশুনানিতে একজন বাসিন্দা হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রশাসক বলেন, 'সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স সংক্রান্ত একটি আইন আছে। সে আইন ভেঙে কয়েক বছরের বকেয়া ট্যাক্স মওকুফ করার এখতিয়ার আমার নেই। এতে ভবিষ্যতে আপনি ও আমি উভয়েই সমস্যায় পড়তে পারি।'
তবে কর ছাড় (রিবেট) বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমার এখতিয়ারের মধ্যে রিবেট দেওয়া সম্ভব। আবেদন করলে সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করব। এতে আইন অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স অনেকটা কমে যাবে এবং সুন্দর সমাধান হবে।'
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়ার জন্য কর মেলার আয়োজন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মেলায় থাকবে ওয়ান স্টপ সেল, যেখানে একদিনেই তাৎক্ষণিকভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের সুযোগ থাকবে।
'মেলাতেই কর ছাড়ের আবেদন করার ব্যবস্থাও থাকবে। ভোগান্তি ছাড়াই অল্প সময়ে আপনি মেলায় হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারবেন,' বলেন ডিএনসিসি প্রশাসক।
গণশুনানিতে ডিএনসিসির অঞ্চল-৭-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খয়বর রহমান এবং অঞ্চল-৮-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন উপস্থিত ছিলেন।