সরকার দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য সরকার দ্বিতীয় আরেকটি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে এখন কাজ চলমান রয়েছে বলে আজ বাসস'কে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এখন একটি ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে বিচার কার্যক্রম আরও তরান্বিত হবে বলে জানায় প্রসিকিউশন।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক কার্যক্রম এখন চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। যেখানে প্রসিকিউশন টিমে চিফ প্রসিকিউটরসহ মোট ১৭ জন প্রসিকিউটর রয়েছেন। আর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় মোট তদন্তকারী কর্মকর্তার সংখ্যা বর্তমানে ২৪ জন।
প্রসিকিউশনের দেওয়া গত ১০ এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসহ মোট ৩ শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। যেখানে ৩৯টির তদন্ত কার্যক্রম (কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার অনুসারে) চলমান। তদন্তের প্রাথমিক সত্যতার আলোকে মিস কেস হয়েছে ২২টি। এইসব মিস কেসে সর্বমোট অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৪১ জন।
যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ৫৪ জন আর ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি ৮৭ জন।
চারটি মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলাগুলো হলো আশুলিয়া লাশ পোড়ানোর ঘটনা, চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, রামপুরা কার্নিশে ঝুলে থাকা গুলির ঘটনা ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'এ সকল মামলায় স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথেই আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।'
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের এক রায়কে কেন্দ্র করে ফুঁসে ওঠে ছাত্র সমাজ। এক পর্যায়ে তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এ আন্দোলন নির্মূলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে হত্যা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।
টানা ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়। আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।