ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী, কমেছে মুরগির দাম

ভরা মৌসুমেও বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। বর্তমানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত মাস থেকে কৃষকরা মূল মৌসুমের পেঁয়াজ তুলছেন। কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করার পরপরই আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কৃষকরা জানান, মৌসুমের শুরুতে তারা প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২২-২৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। যদিও সরকারি হিসাবে এক কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ পড়ে ৩৮-৪১ টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল পাবনার বাজারে কৃষকরা প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪০-৪৫ টাকায়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন টিবিএসকে বলেন, "এখন কৃষকের হাতে পেঁয়াজ নেই। কমিশন এজেন্ট ও আড়তদাররা আগেই সব কিনে নিয়েছে। কৃষকের স্টক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়। ছোট কৃষকরা ঋণ বা দাদনের টাকা শোধ করতে বাধ্য হয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। এই সুযোগ নেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা।"
তিনি বলেন, "কৃষকরা চাইলে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় লোকসান হলেও তারা বিক্রি করে দেন। তাই আমরা অনেক আগেই দাবি জানিয়েছি, প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকদের ইনসেন্টিভ দিতে হবে, নইলে তারা টিকতে পারবে না।"
সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের বাঐটোলা গ্রামের পেঁয়াজচাষি রহমান প্রামাণিক টিবিএসকে বলেন, "গত এক সপ্তাহ ধরে দাম বাড়ছে। যারা আগেই বিক্রি করেছেন তারা লোকসান গুনেছেন। গতকাল প্রতি মণ পেঁয়াজ ২,২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এখন যে দাম, তাতে কৃষকরা কিছুটা লাভবান হবেন। তবে কৃষকদের হাতে এখন পেঁয়াজ কম।"
রাজধানীর বিক্রেতারা জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই এ বছর পেঁয়াজের দাম ছিল তুলনামূলক কম। ভালো ফলনের কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম সর্বনিম্ন ৩০ টাকা পর্যন্ত নেমেছিল। এরপর কিছুটা বাড়লেও ঈদের পরও বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকায়।
শাহজাদপুরের পাইকারি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৫৮ টাকায়। গত সপ্তাহ থেকেই ধীরে ধীরে দাম বাড়ছে।
কমেছে মুরগির দাম
ঈদের এক সপ্তাহ আগে মুরগির দাম বাড়লেও এখন তা কমেছে। তখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ২১০-২৩০ টাকা, আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩৩০ টাকায়।
তবে শুক্রবার রাজধানীতে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৮০-১৯০ টাকায় এবং সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৭০-২৮০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়।
সবজির দাম বাড়তি
এছাড়া, বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন সবজি। তবে এসবের দাম তুলনামূলক বেশি।
প্রতি কেজি পটোল ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ৬০-৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০-৬০ টাকা ও লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁকরোল ১৪০, বেগুন ৮০-১০০, শিম ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৩০, মুলা ৬০, শসা ৮০, করলা ৬০ এবং টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি।