গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া, ৪৫০ কোটি ডলার পরিশোধসহ ঐতিহাসিক ইস্যুতে কাজ করবে পাকিস্তান: পররাষ্ট্র সচিব

১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া, বাংলাদেশের পাওনা ৪৫০ কোটি ডলার পরিশোধ এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসনসহ ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ করবে পাকিস্তান।
আজ (১৭ এপ্রিল) দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে আলোচনা শেষে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, 'দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর জন্য অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করা প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ পাকিস্তানের সঙ্গে উপরোক্ত ঐতিহাসিক অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করে।
জসীম উদ্দিন বলেন, 'আমাদের সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তির জন্য এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা প্রয়োজন।'
পাকিস্তানি পক্ষ কী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব জানান, ভবিষ্যতের আলোচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে তারা [পাকিস্তানি পক্ষ] তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি বলেন, 'তারা (পাকিস্তান) সম্পৃক্ত থাকতে চায়। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বিষয়গুলো তুলে ধরা।'
বার্তা সংস্থা ইউএনবি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পররাষ্ট্রসচিব জানান যে আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারে রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ আসবেন।
খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রসচিব আরও জানান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে প্রায় ১৫ বছর পর আজ সকালে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।
বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তর পর্যায়ের বৈঠক আয়োজন করতে চেয়েছিল ইসলামাবাদ।
ইশাক দারের আসন্ন ঢাকা সফরটি হতে যাচ্ছে ২০১২ সালের পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম ঢাকা সফর।