গুলশানে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা: চাঁদাবাজি বিরোধে খুন হন ডিশ ব্যবসায়ী সুমন, গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১ এর একটি দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ (৫৯), যিনি 'বড় সাঈদ' নামে পরিচিত, এবং মামুন ওরফে 'বেলাল' (৪২)।
র্যাব জানায়, মেহেদী ও 'বড় সাঈদ' মিলে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে দীর্ঘদিন ধরে গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মেহেদী পালিয়ে যায়, কিন্তু তার বাহিনীর সদস্য বড় সাঈদ গুলশান-বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে যায়। কিন্তু সরকার পতনের পর অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রবিন গ্রুপের হয়ে ডিশ ব্যবসায়ী সুমন গুলশান বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করে। গুলশান এলাকার বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সাথে রবিন গ্রুপের সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এই বিরোধের কারণে মেহেদী গ্রুপের প্রধান মেহেদীর নির্দেশে বড় সাঈদ সুমনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিনের আগে থেকেই সাঈদ সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিল্লাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪ থেকে ৫ জনের সন্ত্রাসী দিয়ে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করে। তারা প্রতিদিন সুমনের গতিবিধি লক্ষ্য রাখে।
ঘটনার দিনের বিবরণ দিয়ে র্যাব জানায়, গত ২০ মার্চ সন্ধ্যার সময় মেহেদী গ্রুপের একটি কিলার গ্রুপ সাঈদ-এর বাসায় মিটিং করে এবং তার বাসা থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলশান এলাকায় যায়। গুলশান এলাকায় গিয়ে তারা সুমনকে গোপনে খুঁজতে থাকে।
রাত আনুমানিক ৯ টার সময় তার বাহিনীর সদস্যরা সুমনকে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ডাক্তার ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গুলি করে। সুমন গুলি খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে আরও কয়েকটি গুলি করে। সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এরপরে, ২৫ মার্চ র্যাব-১ ও র্যাব-৮ মিলে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে 'বড় সাঈদ'কে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর সাঈদের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ মার্চ মামুন ওরফে বেলালকে টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই ঘটনার সাথে জড়িত বাকী পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার এবং গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।