Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 17, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 17, 2025
জুলাই অভ্যুত্থানের সেই নারীরা কোথায়?

বাংলাদেশ

নুসমিলা লোহানী
15 March, 2025, 10:20 pm
Last modified: 15 March, 2025, 10:24 pm

Related News

  • শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
  • এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না: একই আসনে নারী ও পুরুষ এমপি নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার
  • ইসি যখনই নির্বাচনের তারিখ দেবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: উপদেষ্টা
  • টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান ড. ইউনূসের  
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি কিয়ার স্টারমার: এফটি

জুলাই অভ্যুত্থানের সেই নারীরা কোথায়?

জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে যখন গাজীপুরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি ওয়াসফিয়া। ওই সময় তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বিসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই প্রস্তুতি রেখেই তিনি রাজপথের আন্দোলনে যোগ দেন।
নুসমিলা লোহানী
15 March, 2025, 10:20 pm
Last modified: 15 March, 2025, 10:24 pm
গ্রাফিক্স: টিবিএস

জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ের একটি রাত। সেই রাতে কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে একসঙ্গে প্রতিবাদের ধ্বনি তুলেছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রাত ১০টায় বহু ছাত্রী ক্যাম্পাসে মিছিল করতে করতে এগিয়ে যান।

এভাবেই সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া নওরিন জামান নামের এক ছাত্রী। তিনি বলছিলেন, আগে থেকেই এ কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। তাই হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হলেও সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়নি।  

নওরিন প্রথমে ৫০ থেকে ৭০ জন নারীকে হল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হল থেকে ছেলেদের হলের দিকে মিছিল করতে করতে এগিয়ে যেতে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ছাত্ররা যেন হলগুলো থেকে বেরিয়ে আসেন এবং তাদের সঙ্গে যোগ দেন।  

বিক্ষুব্ধ এই শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে ছিলেন হতাশ ও ক্ষুব্ধ। কারণ, ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের 'রাজাকার' বলে অভিহিত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা রাজাকার শব্দটি ব্যবহার করেন। আর এটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভকে আরও উসকে দেয়।

নওরিন বললেন, আমি কখনও নারীদের একসঙ্গে এত জোরে আওয়াজ শুনিনি। যখনই আমি [এই মিছিলের] ভিডিওগুলো দেখি, তাদের স্লোগান এবং স্লোগানের প্রতিধ্বনি বৃষ্টির শব্দ ভেদ করে কানে এসে বাজে। সেই বৃষ্টির মধ্যেই বিপুল সংখ্যক ছাত্রী বেরিয়ে পড়েন, তারা ভিজে ভিজে মিছিল করেন।
 
রাতটি ছিল জুলাই আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর একটি। কারণ, এটি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে আরও বড় কিছুতে পরিণত করেছিল। 

দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের ছাত্রীদের মিছিল করার ভিডিওগুলো মিডিয়া ও ইন্টারনেটে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। 

আর এটি ছিল কেবল শুরু।

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। তাদের হামলা ও হামলায় রক্তাক্ত হওয়া ছাত্রীদের ছবি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

আওয়ামী লীগের এই দুর্বৃত্তদের নির্মম হামলার পরও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমানো যায়নি। এমনকি তা নারীদেরও আন্দোলনে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে পারেনি। 

তবে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির আট মাস পর চিত্র এখন ভিন্ন। জুলাই আন্দোলনের সেই নারীরা কোথায়? 

কোন বিষয়টির কারণে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্মগুলোতে নারীদের ভূমিকায় পরিবর্তন এসেছে এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রতি নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা কী ভাবছেন, তা নিয়ে জুলাই আন্দোলনের পাঁচ নারী ও সংগঠকের সঙ্গে আলাপ করেছেন এই প্রতিবেদক।

'আমরা ঐক্যকে ভুলভাবে বুঝেছিলাম'

সরকার পতনের পর আন্দোলনকারীদের মধ্যেও পরস্পরের প্রতি সংহতি বা একাত্মতা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সংগঠক মালিহা নামলাহ বলেন, 'অবশ্যই অভ্যুত্থানে বিজয়ের পর [৫ আগস্ট] নারীরা এক ধাপ পেছনে সরে গিয়েছেন। আমি এটা বলতে পারি না যে কেউ [কার্যকরভাবে] তাদের সরিয়ে দিয়েছে। তবে পরিস্থিতির কারণে অনেকেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।' 

ছবি: রাজীব ধর

১৪ জুলাইয় রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ভয়াবহ হামলার শিকার বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মালিহাও ছিলেন। সেইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রলীগমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণার আন্দোলনেও ছিলেন তিনি। 
 
মালিহা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে 'অভ্যন্তরীণ, নোংরা রাজনীতির' দিকে ইঙ্গিত করেন, যা ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বা এজেন্ডা থেকে উদ্ভূত হয়েছে।

তিনি বলেন, যারা দেশের ভালো করার ইচ্ছা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন, তারা একপর্যায়ে বুঝতে পারলেন যে সবকিছুই আলাদা, প্রত্যেকেরই আলাদা এজেন্ডা রয়েছে এবং শেষমেশ জায়গাটি আসলে তাদের জন্য নয়।

মালিহা পেছনে চলে যাওয়া সব নারীর হয়ে কথা বলতে না পারলেও বৃহৎ পরিসরে নারীদের এভাবে পেছনে চলে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন।

সে সময়ে কথা স্মরণ করে নওরিন বললেন, আমরা যখন সরে আসি, তখন আমাদের পুরুষ সহযোদ্ধারা নিষেধ করেছিলেন তা করতে। কিন্তু, আমরা স্বেচ্ছায় সরে আসি। তখন তাদের মতো আমরা একই দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। আমরা সবাই একই লক্ষ্য অর্জন করতে চেয়েছিলাম।

কিন্তু এখন ঘটনা অনেকটাই আলাদা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা যখন নিজেদের অধিকার চাচ্ছি, যখন আমাদের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার করছি, তখন সবার দাবির সঙ্গে সেটা আর মিলছে না। আগেও তারা (পুরুষ সহযোদ্ধারা) খুব একটা আলাদা ছিলেন না, কিন্তু সেটা তারা আমাদের এভাবে খুলে বলতেন না, এখন যেমন বলে থাকেন। শুধু তখন আমাদের সবার দাবিতে ঐকমত্য হয়েছিল। আমি মনে করি, ওই ঐকমত্য দেখে ভুল বুঝেছি আমরা নারীরা।'

নওরিন সেই সময় একটি মেসে ছিলেন। সে সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বললেন, ১৮ জুলাই সকাল ৮টায় প্রভোস্ট তার হলের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 'পুলিশ প্রবেশ করলে কে তোমাদের নিরাপত্তা দেবে? এরপর নারীরা চলে গেল। তখন আমি আমার ব্যাচের পাঁচজনকে আশ্রয় দিয়েছিলাম।'

বিভিন্ন অসুবিধা সত্ত্বেও নওরিন আন্দোলনে অংশ নেওয়া অব্যাহত রেখেছিলেন।  

আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের সেই কাঙ্ক্ষিত 'বিজয়' অর্জনের পর লিঙ্গ বৈষম্য কি আবার সেই অভ্যুত্থানপূর্ব অবস্থাতেই ফিরে গিয়েছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোমা দে বলছিলেন, 'জেন্ডার পলিটিক্সের অংশ হিসেবে প্রতিবার এমনটাই হয়ে থাকে। নারীদের সরিয়ে পুরুষেরাই রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসে। ইতিহাসে এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। আমরা কমিউনিস্ট রাশিয়ায় এমনটা দেখেছি। এছাড়া ইরান, উপনিবেশবাদ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ভারত এবং এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশেও এ চিত্র দেখেছি।'

ছবি: রাজীব ধর

তিনি আরও বলেন, নারীদের সবসময়ই রিজার্ভ সেনা হিসেবে দেখা হয়। তারপর জরুরি অবস্থা বা সংকট কেটে গেলে হয়তো তাদের ঘরে ফেরত পাঠানো হয়, নয়তো তাদের থাকতে হয় পুরুষদের তত্ত্বাবধানে। 

আন্দোলনে অংশ নেওয়া গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়া ওয়াসিফা বলেন, 'আমার মনে আছে, আমি সড়কে অসংখ্য নারী দেখেছি। তাদের একতা ও দৃঢ় সংকল্প ছিল অসাধারণ।' 

জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে যখন গাজীপুরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি ওয়াসফিয়া। ওই সময় তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বিসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই প্রস্তুতি রেখেই তিনি রাজপথের আন্দোলনে যোগ দেন। প্রথমে তিনি তার ছোট বোনের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। পরে তিনি ঢাকার উত্তরায় তার এক কাজিনের বাসায় চলে যান। এর পর সেখান থেকেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখেন। 

'ওই সময় আমরা নিরাপদ ছিলাম না। প্রতিবারই আমরা আমাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েছিলাম', বলেন ওয়াসফিয়া।

আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণের অসংখ্য উদাহরণ এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। যেমন, অনেক ক্যাম্পাস থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নারীদের। তা সত্ত্বেও তাদের এ অবদান ছাত্র-নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্মগুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্বের ভূমিকায় আনুপাতিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না। এমনকি ছাত্রদের কোনো দল বা কমিটির মুখপাত্র হিসেবেও কোনো নারীকে দেখা যায়নি। 

জাতীয় লিঙ্গ বৈষম্য

ওয়াসিফা জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের (জেআরএ) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর সদস্য সংখ্যা ১৫০। সংগঠনটি জুলাই বিপ্লবে ঘটা ভয়াবহ নৃশংসতা ও অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করা নিয়ে কাজ করছে। সংগঠনটির তালিকায় আন্দোলনে শহিদ এমন ১৮ নারীর নাম উঠে এসেছে, যাদের সবাই শিক্ষার্থী নন।

নারী শহিদদের একজন নাফিসা মারওয়া। ১৭ বছর বয়সি এই কলেজ শিক্ষার্থী গত ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে শহিদ হন। নাফিসার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ওয়াসফিয়া তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

নাফিসার পরিবারের মতো আর সব শহিদ পরিবারগুলোরও সাধারণ একটা চাওয়া হলো, সরকারের পক্ষ থেকে যেন তাদের কার্যকরী সহায়তা করা হয়। 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জেআরএ 'ব্রেভ ডটার্স অব জুলাই' (জুলাইয়ের বীর কন্যা) শিরোনামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। আন্দোলনে নারীদের অবদান তুলে ধরতেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

নারীদের এই অবদান জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রায় আসে না বললেই চলে উল্লেখ করে ওয়াসফিয়া বলেন, '(এ প্রদর্শনীর) উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে ভুলে যেতে না দেওয়া।'

বেশিরভাগ পরিবার প্রায়ই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে মেয়েদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া বা হামলার ভয়ে সম্মুখ সারিতে থাকতে নিরুৎসাহিত করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বললেন, একইভাবে ক্যাম্পাসগুলোতেও প্রায়ই '(রাজনীতি, সিদ্ধান্ত) এসব বিষয়ে তুমি কী বুঝবে?', 'বাড়ি যাও কিংবা পেছনে যাও'- এ ধরনের মন্তব্য শোনা যায়। 

নারী বিদ্বেষের কারণে নারীদের কীভাবে পেছনে রাখা হচ্ছে এবং কীভাবে তাদের ভূমিকা খাটো করে দেখা হচ্ছে, সে বিষয়েও কথা বলেন রুপাইয়া। তিনি মানুষকে এমন কথাও বলতে শুনেছেন, যেখানে নারী রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। 

ক্যাম্পাসে আন্দোলন অংশ নিয়ে রুপাইয়ার এক বন্ধু নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলায় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন। এ ঘটনার পর ১৫ জুলাই রুপাইয়া পুরোপুরিভাবে আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলন তীব্র হতে শুরু করলে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে হলগুলো খালিও হয়ে যায়। তখন রুপাইয়ার মনে হয়েছিল, যে করেই হোক তাকে সেখানে উপস্থিত থাকতেই হবে। 

রুপাইয়া তার বেশিরভাগ সময় শাহবাগ, শহিদ মিনার ও সায়েন্স ল্যাবে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। রুপাইয়ার পরিবার মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকেন। সেখান থেকে ৪ আগস্ট রুপাইয়ার ভাইকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। তাকে স্থানীয় কাউন্সিলর আফিফের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বেধড়ক মারধর করা হয়। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা একটি সভায় অংশ নেন। এই ফাঁকে তাদেরই একজন রুপাইয়ার ভাইকে সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। 

সেদিনের কথা স্মরণ করে রুপাইয়া বললেন, তার (ভাই) পোশাক ছেঁড়া ছিল। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল। কয়েকজন আন্দোলনকারী তাকে উদ্ধার করেছিলেন। 

রুপাইয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য (কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক) এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক।   

এ বছরের ১৫ জানুয়ারি রুপাইয়া আবারও হামলার শিকার হয়েছিলেন। রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভবনের সামনে হামলায় গুরুতর আহতদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। 

উল্লেখ্য, পাঠ্যপুস্তকে 'আদিবাসী'শব্দ প্রবেশ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১৫ জানুয়ারি সকালে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে 'স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি'নামের একটি সংগঠন। অন্যদিকে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা'র ব্যানারে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একদল মানুষ পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায়। তারা এনসিটিবি ভবনের সামনে পৌঁছালে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও হামলা হয়। এতে কয়েকজন নারী বিক্ষোভকারী রক্তাক্ত হন। যা সেই ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ক্যাডারদের বর্বরোচিত হামলার কথা মনে করিয়ে দেয়।  

মোদ্দাকথা হলো এটি নারীর নিরাপত্তার বিষয়। আর যখন তা বারবার হুমকি ও আক্রমণের শিকার হতে থাকে, তখন আসলে নারীরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণে পিছপা হন অথবা এটি নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়া থেকে তাদের পেছনে ঠেলে দেয়। 

আরেক সংগ্রামী নারী নুসরাত নুর। তিনি রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তিনি বলছিলেন, '(গণঅভ্যুত্থানের পর) নারী আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হয়েছেন। আমি বলতে পারি, গণঅভ্যুত্থানের পর নারীমুখ খুব কমই দেখেছি। যেমন ধরুন নুসরাত আপুর কথা (নুসরাত তাবাসসুম, অন্যতম সমন্বয়ক)। আন্দোলনের পর তাকে আমরা তেমন দেখতে পাইনি, এমনকি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার পরেও। আমি জানি না কেন, তবে আমরা সবাই বিষয়টি লক্ষ্য করেছি।  

এসব আক্রমণ বলতে কেবল শারীরিক আঘাতই যে বোঝায় তা নয়, বরং এর মধ্যে রয়েছে নারীদের নিয়ে কটূক্তি করা, তাদের চরিত্র নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা, তাদের নামে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ইত্যাদি, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। 

দিনটা ছিল ৩১ জুলাই। সেদিন পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে তাদের পথরোধ করেছিলেন নুসরাত জাহান। তার প্রতিবাদের এই ছবি জুলাই আন্দোলন এবং এতে নারীদের ভূমিকার প্রতীক হয়ে ওঠে। 

কথা হলে জুলাইয়ের এই যোদ্ধা বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতিতে আগ্রহী নই। আমি সে সময় আমার নীতিগত অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করেছিলাম।'  

নিরাপত্তার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'রাস্তায় নিরাপত্তা নিয়ে নারীদের মনে যে ভীতি রয়েছে, সেটি যখন সরকার দূর করতে পারবে, তখন তারা সফল হবে।'  

অন্তর্বর্তী সরকার নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। পুরো আলোচনায় যা স্পষ্ট।

নওরিন উল্লেখ করেন, গত ৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় একদল বিক্ষুব্ধ জনতা রাজধানীর শাহবাগ থানার প্রবেশপথ ঘেরাও করে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে আদালত ওই ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে 'ওড়না পরা' নিয়ে হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে আলোচনা সৃষ্টি হলে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছিল মোস্তফা আসিফ অর্ণব নামের এক ব্যক্তিকে। পরদিন বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তিকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি জামিনে মুক্তি পান। 

পরে হুমকির মুখে ওই ছাত্রী মামলা তার মামলা প্রত্যাহার করেন। 

নওরিন বলেন, 'পিতৃতান্ত্রিক এবং সামাজিক রীতিনীতি দিয়ে আবদ্ধ একটি জাতি হিসেবে আমরা আসলে নারীদের কথা শুনতে প্রস্তুত নই, সমস্যাটা এখানেই।'  

সবশেষে হয়তো আমাদের অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকার, সংস্কার কমিশন, উপদেষ্টা পরিষদ, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন কমিটি, দল এবং প্ল্যাটফর্মগুলোকে জিজ্ঞাসা করতে হবে- জুলাই আন্দোলনের নারীরা কোথায়?

Related Topics

টপ নিউজ

নারী / জুলাই আন্দোলন / গণঅভ্যুত্থান / মিছিল / জাতীয় নাগরিক কমিটি / গাজীপুর / শহিদ / পুলিশ / শেখ হাসিনা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে
  • ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে
  • চট্টগ্রামে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে গেস্টহাউসে তল্লাশির ভিডিও ভাইরাল, আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
  • ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক হাইকমিশনার মুনা তাসনিম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু
  • “তেহরানের আকাশ এখন আমাদের দখলে”—ইসরায়েলের দাবি, কিন্তু বাস্তবতা কী?
  • ‘মেয়র’ পরিচয়ে নগর ভবনে সভা করলেন ইশরাক

Related News

  • শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
  • এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না: একই আসনে নারী ও পুরুষ এমপি নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার
  • ইসি যখনই নির্বাচনের তারিখ দেবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: উপদেষ্টা
  • টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান ড. ইউনূসের  
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি কিয়ার স্টারমার: এফটি

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে

2
আন্তর্জাতিক

ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে

3
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে গেস্টহাউসে তল্লাশির ভিডিও ভাইরাল, আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

4
বাংলাদেশ

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক হাইকমিশনার মুনা তাসনিম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

5
আন্তর্জাতিক

“তেহরানের আকাশ এখন আমাদের দখলে”—ইসরায়েলের দাবি, কিন্তু বাস্তবতা কী?

6
বাংলাদেশ

‘মেয়র’ পরিচয়ে নগর ভবনে সভা করলেন ইশরাক

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net